স্পোর্টস ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিনেই পুরোটা নিজেদের করে নিতে পারলেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তাদের সংগ্রহ থেমেছে ২৩৩ রানে। খেলতে পেরেছেন ৮২ ওভার ৫ বল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান এসেছে মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাট থেকে। সেই সাথে নাজমুল হোসেন শান্ত (৪৪), লিটন দাস (৩৩), অধিনায়ক মুমিনুল হক (৩০), মাহমুদউল্লাহ (২৫) ও তাইজুল ইসলাম (২৪) ছাড়া আর কেউ বলার মতো কোনো অবদান রাখতে পারেননি।
শুক্রবার পাকিস্তান সময় সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই বিপদে পড়েন সফরকারীরা। ইনিংসের প্রথম ১০ বলের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় মুমিনুল হকের দল। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে স্লিপে আসাদ শফিককে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এ টেস্টে অভিষেক হওয়া সাইফ হাসান।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ট্রিপল সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবাল মাত্র ৩ রান করে মোহাম্মদ আব্বাসের লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন।
এ অবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেন মুমিনুল ও শান্ত। তাদের জুটি থেকে আসে সর্বোচ্চ ৫৯ রান। পরে শাহীনের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ধরা পড়ে মুমিনুল বিদায় নিলে হাল ধরতে আসেন মাহমুদউল্লাহ। এবার ৩৩ রানের জুটি করে আব্বাসের বলে ক্যাচের শিকার হন শান্ত।
পঞ্চম জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ও মিঠুন যোগ করেন ১২ রান। পরে লিটনকে সাথে নিয়ে ৫৪, তাইজুলের সাথে ৫৩, রুবেল হোসেনকে নিয়ে ১৫ ও আবু জায়েদের সাথে ৪ রানের জুটি হয় মিঠুনের।
নাসিম শাহর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে বন্দী হয়ে মিঠুনের বিদায়ের পর আর কোনো রান যোগ না করেই রানআউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন জায়েদ। শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন ইবাদত হোসেন।
স্বাগতিকদের পক্ষে শাহীন শাহ আফ্রিদি চারটি, মোহাম্মদ আব্বাস ও হারিস সোহেল দুটি করে এবং নাসিম শাহ একটি উইকেট পান। ৮৩তম ওভারের শাহিন শাহ আফ্রিদির পঞ্চম বলটা ভয়ে ভয়ে ডিফেন্স করেন আবু জায়েদ রাহি। বলটা কোনরকম ক্রিজ থেকে বেরিয়ে মিড অনে যায়। এরমধ্যেই এবাদত হোসেনের সঙ্গে বিটুইন দ্যা উইকেটে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়। কিন্তু তা রান আউটের সুযোগ সেভাবে তৈরি করছে না দেখে মিড অনের ফিল্ডার মোহাম্মদ আব্বাস মোটেও তাড়াহুড়ো করলেন না। বলটা আরামসে হাতে তুলে নিয়ে থ্রো করলেন। কিন্তু রাহি পপিং ক্রিজটা যেনো খুঁজেই পেলেন না। আলসভাবে ঘুরে ব্যাট ফেলতে ফেলতেই ভেঙে গেলো স্ট্যাম। আর সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে গেলো বাংলাদেশের ইনিংস, সঙ্গে দিনের খেলাও। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে ২৩৩ রানেই গুড়িয়ে গেল টাইগাররা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন মোহাম্মদ মিঠুন।
এর আগে রাওলপিন্ডিতে টস জিতে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানি পেসারদের তোপের মুখে খেই হারান দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সাইফ হাসান। অভিষেক ম্যাচে সাইফকে শূন্য রানে ফেরান শাহীন আফ্রিদি। মোহাম্মদ আব্বাসের শিকার হয়ে তামিম ফেরেন ৩ রানে। এরপর অধিনায়ক মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩০ রানে মুমিনুল ফিরে আবার চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে জুটি গড়েন শান্ত। দুজন মিলে দলকে লড়াইয়ে ফেরানের চেষ্টা করেন। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। শেষ বিকেলে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ছয় নম্বরে মোহাম্মদ মিঠুন। তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। শুধু সঙ্গ দিয়েছেন বললে তার ব্যাটিং শৈলির সঙ্গে অবিচার হবে। তাইজুল দেখাচ্ছিলেন কীভাবে টেস্ট খেলতে হয়।