কানাডায় টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল্লাহ হিল রাকিবের আকস্মিক মৃত্যু পোশাক খাতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্টস মালিকরা বলেছেন, পোশাক খাত পরীক্ষিত একজন বন্ধু হারিয়েছে, যার ধ্যান-জ্ঞান পুরোটাই ছিল বাংলাদেশের গার্মেন্টস নিয়ে।
শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে আবদুল্লাহ হিল রাকিবের জানাজায় এসব কথা বলেন পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতারা। সকাল ১০টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৯ জুন বিকালে কানাডার একটি লেকে নৌকা দুর্ঘটনায় মারা যান টিম গ্রুপের এমডি ও বিজিএমইএর সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব। তার মরদেহ বিমানের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার রাতে ঢাকায় পৌঁছায়।
বিজিএমইএর সর্বশেষ নির্বাচনে বিজয়ী প্যানেল ফোরামের নেতা ও রাইজিং ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান সবাইকে আব্দুল্লাহ হিল রাকিবের জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানান।
জানাজায় বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান স্মৃতিচারণ করে বলেন, রাকিব নিজের পরিবার, বন্ধু, ব্যবসা ও সংগঠন- সবকিছুকে সমানভাবে গুরুত্ব দিত। এ খাতের যেকোনো সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
সাবেক সভাপতি এসএম ফজলুল হক বলেন, রাকিব ছিলেন উজ্জ্বল প্রদীপ, যিনি অনেক স্বপ্ন দেখতেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই প্রদীপ ঝড়োহাওয়ায় নিভে গেল। আমরা তার জন্য দোয়া করি।
বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, তার মৃত্যু আমাদের জন্য গভীর বেদনার। তিনি সব সময় পোশাক রপ্তানিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারে নেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
জানাজার শুরুতে উর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, রাকিব শুধু নিজের প্রতিষ্ঠান নয়, বরং পুরো শিল্প ও দেশের কল্যাণ নিয়ে চিন্তা করতেন। পোশাক শিল্পে দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, টেকসই উন্নয়ন ও ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’-এর অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন তিনি।
আবদুল্লাহ হিল রাকিবের মেয়ে লামিয়া তাবাসসুম বলেন, আমার বাবা স্বপ্ন দেখতেন এবং অন্যদের স্বপ্ন দেখাতেন। তিনি যে স্বপ্নগুলো আমাদের দিয়ে গেছেন, সেগুলো যেন আমরা সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
গত ৫ জুন পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে কানাডায় যান আব্দুল্লাহ হিল রাকিব। সেখানেই নৌকা দুর্ঘটনায় ৯ জুন মারা যান। কানাডার টরন্টোর ড্যানফোর্থে সুন্নাতে জামাত মসজিদে গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সকালে উত্তরা বিজিএমইএ ভবনে তার প্রথম জানাজা এবং বাদ জোহর বনানী ডিওএইচএস মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিমান বাহিনী শাহীন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।