ব্যাটাররা এনে দিয়েছিলেন বড় সংগ্রহ। মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররাও। কিন্তু আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে লংকানদের কাছে ৩ উইকেটে হেরে গেছে টাইগাররা।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলংকা (২৮৭/৭)। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সমতায় ফিরল লংকানরা (১-১)। দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা হয়েছেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে সিরিজের অলিখিত ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। শুরুতেই লংকানদের টুঁটি চেপে ধরে টাইগাররা। সপ্তম ওভারে ৪৩ রনে সফরকারীদের ৩ উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিকরা। যার ২টি শিকার শরিফুল ইসলামের। আউট হওয়া তিনজনের মধ্যে ১৩ বলে ১৬ রানে আউট হন লংকান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। আভিশকা ফার্নান্দো মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। এক রানে ফেরেন সাদিরা সামারাবিক্রমা।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে কঠিন চাপ কাটিয়ে ওঠে শ্রীলংকা। ১৮৫ রানের ম্যাচজয়ী জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা ও চারিথ আসালাঙ্কা। জুটি গড়ার পথে দুজনই শতকের সম্ভাবনা জাগান। কিন্তু বঞ্চিত হয়েছেন আসালাঙ্কা। ৯৩ বলে ৯১ রানে আউট হন তিনি। ইনিংস সাজান ছয়টি চার ও চারটি ছক্কায়। মন্থর শুরু করা নিশাঙ্কার ব্যাটেও ঝড় উঠেছিল শেষ দিকে। ১১৩ বলে ১৩টি চার ও তিন ছক্কায় ১১৪ রানে আউট হন লংকান ওপেনার। বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত ক্যাচ না ছাড়লে ব্যক্তিগত ফিটটির পরই ফিরতে পারতেন নিশাঙ্কা।
নিশাঙ্কা-আসালাঙ্কা দুজনকে ফিরিয়ে লড়াইয়ের আভাস দেয় বাংলাদেশ। ২৩ রানের মধ্যে টাইগাররা তুলে নেয় তিন উইকেট। পরে লংকানদের ইনিংসের হাল ধরেন দুনিথ ওয়েলালাগে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ১৬ বলে ২৫ রান করা হাসারাঙ্গাকে ফেরান তাইজুল ইসলাম; ক্যাচ বানান লিটন দাসের। যদিও ততক্ষণে ম্যাচ থেকে পুরোপুরিই ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। ওয়েলালাগে ২৫ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে দল হারায় ওপেনার লিটন দাসের উইকেট। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে ফেরেন তিনি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার ভালোভাবেই ধাক্কা সামাল দেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৭৫ রান। জুটি ভাঙে শান্তর বিদায়ে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার ফিরেছেন ৩৯ বলে ৪০ রান করে।
সৌম্য অবশ্য ব্যক্তিগত ফিফটি করেছেন। ৬৬ বলে ৬৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ওপেনার। পরে মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন তাওহিদ হৃদয়। এ সময়ে ব্যক্তিগত ফিফটি ছাড়িয়েছেন তিনি। আভাস দিয়েছিলেন শতকেরও। কিন্তু ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় বঞ্চিত হন হৃদয়। রানখরায় ভুগতে থাকা এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রানে। ১০২ বলের ইনিংস হৃদয় সাজান তিনটি চার ও পাঁচ ছক্কায়।
এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম ২৮ বলে ২৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ১৮ বলে ১২, তানজিম হাসান সাকিব ৩৩ বলে ১৮ ও তাসকিন আহমেদ ১০ বলে ১৮* রান করেন। ৪৫ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন লংকান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৩০ রানে ২টি শিকার দিলশান মদুশঙ্কের। অন্য উইকেটটি নিয়েছেন প্রমদ মদুশান।