আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। আমরা উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচিত সরকারই একমাত্র দেশ চালাবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ সাংবাদিক পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
নির্বাচন কমিশন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। আশা করছি- নির্বাচন কমিশন এই কাজ (নির্বাচনের প্রস্তুতি) খুব দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন, যেন এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তাহলে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঐকমত্য কমিশনে প্রত্যেকটি বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে বিএনপি একমত হতে পারেনি। ভবিষ্যতে সংসদে বিতর্কের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে, এমন খবর পত্রিকায় এসেছে উল্লেখ করে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তাঁর দল তিন দিন আগে সংবাদ সম্মেলন করেছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তাঁদের জন্ম সংস্কারের জন্য। আজ যদি বলা হয়, বিএনপি সংস্কার আটকে দিচ্ছে, তাহলে এটি অন্যায়ভাবে বলা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত ট্যারিফের বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করার দরকার ছিল। এই সময় এখনও পার হয়ে যায়নি।
সীমান্তে হত্যা ও পুশইনের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, পুশইনকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। সরকারকে এটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। জনমত সৃষ্টি করা দরকার। সরকার যেন ভারতের সঙ্গে দর কষাকষিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়। এ ছাড়া পানির হিস্যার বিষয়টি জোরালোভাবে দেখতে হবে। পানি বণ্টনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার, দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।