খুলনা প্রতিনিধি: নিখোঁজের ২৯ দিন পর ফরিদপুর থেকে উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে মুখ খুলেছেন। রহিমা বেগমের দাবি, গত ২৭ আগস্ট রাতে পানি আনতে গিয়ে তিনি অপহৃত হন। চার ব্যক্তি তাঁকে জাপটে ধরে নাকে রুমাল চেপে ধরেন। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁর কিছু মনে নেই।
আজ রোববার বিকেলে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। ফরিদপুর থেকে উদ্ধারের পর রহিমা বেগমকে খুলনা নগরের দৌলতপুর থানায় আনা হয়। শনিবার দিনগত রাত ২টায়
পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা বেগম অপহৃত হয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁকে চারজন মিলে অপহরণ করে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁরা কারা বা কোথায় নিয়ে যান, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা সাদা (খালি) স্ট্যাম্পে কিছু স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাঁকে একটা নির্জন জায়গায় ছেড়ে দেন। কিন্তু জায়গাটা কোথায় সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। এরপর তিনি মনি নামের একটি মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। তবে সেই মেয়ের বাড়ি কোথায় তিনি বলতে পারছেন না। এরপর ওই মেয়ে তাঁকে এক হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেন। পরে তিনি মকসুদপুরে চলে আসেন।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় এই বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন রহিমা বেগম। আজ শনিবার সকালে
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, যখন যেখানে ছিলেন, তাঁরা তাঁকে কাপড়চোপড় দিয়েছেন বলে জানান রহিমা। সেগুলো তিনি সংগ্রহে রেখেছিলেন। মুকসুদপুর থেকে তিনি বোয়ালমারীতে আসেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর বাড়ির ২৮ বছর আগের ভাড়াটিয়া আবদুস কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান। কুদ্দুস একসময় খুলনার দৌলতপুরের সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন। তিনি ভেবেছিলেন, সেখানে গেলে আশ্রয় পাওয়া যেতে পারে।
খুলনায় না গিয়ে ফরিদপুরে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রহিমা বেগম পুলিশকে জানান, খুলনায় আসতে ভয় পেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, কুদ্দুসের বাড়ি যাওয়ার পর মেয়েদের খবর দেবেন। এরপর মেয়েদের সঙ্গে চলে যাবেন।
নিখোঁজ মাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মরিয়ম মান্নান
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান, সৈয়দপুরে অবস্থানকালে ঘটনাটি আলোচিত হলে ওই এলাকার একটি ছেলে বিষয়টি স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির নজরে আনেন। ওই জনপ্রতিনিধি বিষয়টি খুলনার দৌলতপুরের এক কাউন্সিলরকে জানান। তিনি ঘটনাটি দৌলতপুর থানা-পুলিশকে জানান। এরপর দৌলতপুর থানার পুলিশ গতকাল শনিবার ওই এলাকায় গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
পুলিশ সুপার জানান, রহিমা বেগমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তিনি জবানবন্দি দেবেন। এরপর আদালতের সিদ্ধান্ত মতো কার্যক্রম চলবে।