নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে প্রাণঘাতি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ৩০০ শয্যার হাসপাতালটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকার পরে এটি করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম হটস্পট হিসেবে বিবেচিত হবে।
আক্রান্তদের রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া আগে থেকে শুরু হলেও সেখানে ১০ বেডের আইসিইউ ওয়ার্ড তৈরিতে আরও ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্চয়।
জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার জন্য ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের অন্য হাপসপাতালে স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই সাথে, করোনা চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতাল ৪০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড ও করোনা রোগীদের জন্য ১০ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রস্তুত কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিকে, ১১ এপ্রিল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত করা হয়। পর ১২ এপ্রিল গাইনি বিভাগের আরেক চিকিৎকের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক গৌতম রায়, বেশকিছু নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ ১৩ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়। হাসপাতালটির ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালটি করোনার জন্য প্রস্তুতি কাজ বন্ধ করে জীবানুমুক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
তবে, ১২ এপ্রিল সীমিত পরিসরে চালু করা হয় হাসপাতালটির ফ্লু-কর্ণার। যেখানে করোনা উপসর্গ আছে এমন রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। গত ১৩ এপ্রিল থেকে হাসপাতালটিতে শুরু হয় করোনা রোগী ভর্তি কার্যক্রম।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক গৌতম রায় বলেন, ‘হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে এবং করোনার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে আইসিইউ ওয়ার্ড প্রস্তুত হয়নি। তাই প্রাথমিকভাবে ৯ জন চিকিৎসক, ১৮ জন নার্স ও ৬ জন ওয়ার্ডবয়ের সমন্বয়ে করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি শুরু করা হয়েছে।
রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে, রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেয়া হবে। এছাড়া সম্পূর্ণ করোনা চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য বিভাগে চিকিৎসক ও বিভিন্ন সরঞ্জামের আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল থেকে করোনা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি। বতর্মানে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৭ জন রোগী ভর্তি আছে এবং চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন প্রায় ২৫০ জন রোগী।
হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্চয় জানান, করোনা আইসিইউ প্রস্তুত হতে আরও ২০ দিন সময় লাগবে।
ডা. সঞ্চয় বলেন, ‘চিকিৎসক ও করোনা চিকিৎসার সরঞ্জামের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে আমরা আবেদন করেছি। ইতোমধ্যে উপজেলা ও অন্যান্য হাসপাতালগুলো থেকে করোনা চিকিৎসার জন্য আমাদের ১০ জন চিকিৎসক দেয়া হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকদের থাকার একটা সমস্যা ছিল সেটারও সমাধান হয়েছে।’
করোনা আইসিইউ ওয়ার্ড প্রস্তুত কাজের অগ্রগতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৪০ বেডের আইসোলেশন তৈরি। কিন্তু ১০ বেডের আইসিইউ এখনো প্রস্তুত হয়নি। যে রুমে আইসিইউ করা হবে সে রুমকে নেগেটিভ প্রেসার করতে হয়, ফুল এসি করতে হয়। এ সকল ব্যবস্থা আমাদের হাসপাতালে কখনো ছিল না। তাই বলার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইসিইউ তৈরি করতে পারিনি এবং অনেকটা সময়ও লাগছে।