ইসলাম ও ধর্ম ডেস্ক, আজনিউজ২৪: মুসলিম নামের সঙ্গে বিভিন্ন উপাধি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কখনো সবিস্তারে, কখনো সংক্ষিপ্ত আকারে সেসব পরিভাষা ব্যবহৃত হয়। নিম্নে এমন কিছু পরিভাষা উল্লেখ করা হলো—
আল্লামা : আল্লামা শব্দের অর্থ মহাজ্ঞানী। এটি ইসলামী চিন্তা, আইন ও দর্শনের ক্ষেত্রে উঁচু পর্যায়ের পণ্ডিতদের নামের সঙ্গে ব্যবহৃত সম্মানজনক উপাধি।
সা. স. দ. : এ শব্দগুলো সংক্ষেপে রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ ও সালাম প্রেরণের উদ্দেশে লেখা হয়। রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে দরুদ পড়তে হয়। সেই চিন্তা থেকে লেখার ক্ষেত্রে এই শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়।। সা., স. অথবা দ. যেটাই লেখা থাকুক; পড়তে হবে—‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।’ এর অর্থ, আল্লাহ তাঁর [নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর] ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।
পরিভাষায় এ বাক্যের নাম দরুদ। তাই সংক্ষেপ করতে গিয়ে অনেক সময় ‘দ.’ লেখা হয়। আবার প্রথম বর্ণ ‘স’ হওয়ায় শব্দ সংক্ষেপ করে ‘সা.,’ কিংবা ‘স.’ লেখা হয়।
আ. : এ শব্দসংক্ষেপ লেখা হয়ে থাকে রাসুল (সা.) ছাড়া অন্য নবীদের নামের পর। এর পূর্ণ রূপ হলো, ‘আলাইহিস সালাম।’ অর্থ, তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
রা., রাযি., রাজি. ও রাদি. : সাহাবিদের নামের পর এ শব্দগুলো লেখা হয়। রাসুল (সা.)-এর স্নেহধন্য সাহাবিরা প্রথম মুসলমান। তাঁদের নাম সম্মানের সঙ্গে লিখতে হয়। এ শব্দসংক্ষেপগুলোর পূর্ণরূপ একবচন পুরুষের ক্ষেত্রে ‘রাজিয়াল্লাহু আনহু’, বহুবচন পুরুষের ক্ষেত্রে ‘রাজিয়াল্লাহু আনহুম’, একবচন নারীর ক্ষেত্রে ‘রাজিয়াল্লাহু আনহা’, বহুবচন নারীর ক্ষেত্রে ‘রাজিয়াল্লাহু আনহুন্না’ এবং দ্বি-বচন নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে ‘রাজিয়াল্লাহু আনহুমা।’
পূর্ণ বাক্যের অর্থ হলো, আল্লাহ তাঁর অথবা তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন।
র., রহ. : নবী ও সাহাবি ছাড়া বিশিষ্ট নেককার, পরহেজগার, মুত্তাকি মুসলিমদের মধ্যে যারা মারা গেছেন, তাদের নামের পর এই দুটি শব্দ ব্যবহৃত হয়। এর পূর্ণ রূপ হলো, ‘রাহমতুল্লাহি আলাইহি।’ বাক্যটির অর্থ তাঁর ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
দা. বা., মু. আ., হাফি. : এ শব্দসংক্ষেপগুলো লেখা হয় বিশিষ্ট নেককার, পরহেজগার মুসলিম মনীষীদের মধ্যে যাঁরা জীবিত আছেন তাঁদের নামের পর। দা. বা.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো ‘দামাত বারাকাতুহুম।’ এর অর্থ তাঁর কল্যাণসমূহ স্থায়ী হোক।
মু. আ.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো—‘মুদ্দাজিল্লুহুল আলী।’ এর অর্থ তাঁর মহান ছায়া আমার ওপর দীর্ঘ হোক। হাফি.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো, ‘হাফিজাহুল্লাহ।’ এর অর্থ আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন।
মাও./মাওলানা : এ শব্দ লেখা হয় কওমি মাদরাসা থেকে তাকমিল বা দাওরায়ে হাদিস উত্তীর্ণ অথবা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল উত্তীর্ণদের জন্য। এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো ‘মাওলানা।’ এর অর্থ আমাদের কল্যাণকামী বন্ধু।
মুহাদ্দিস, মুফাসসির, মুফাসসিরে কোরআন : মুহাদ্দিস মানে হাদিস শাস্ত্রের পণ্ডিত। হাদিস শাস্ত্রে বিশেষ পাণ্ডিত্য অর্জনকারীর জন্য এই উপাধি ব্যবহার করা হয়। মুফাসসির মানে তাফসিরকারক। কোরআনের ব্যাখ্যা করতে সক্ষম এবং এ বিষয়ে বিশেষ জ্ঞানের অধিকারীকে মুফাসসির বলা হয়। এখান থেকে এসেছে মুফাসসিরে কোরআন উপাধি।
ইমাম, পেশ ইমাম, খতিব : যিনি মসজিদে নামাজের ইমামতি করেন তাঁকে ‘ইমাম’ বলা হয়। আর মসজিদে একাধিক ইমাম থাকলে প্রধান ইমামকে ‘পেশ ইমাম’ বলা হয়। আর যিনি জুমার নামাজের খুতবা দেন এবং ওই নামাজ পড়ান তাঁকে ‘খতিব’ বলা হয়।