নববর্ষের অনুষ্ঠান ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তত আড়াই হাজার র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
রবিবার রমনার বটমূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান ঘিরে র্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন।
এদিন সকালে র্যাব প্রধান রমনা বটমূল এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। আশা করি উৎসবটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে। ব্যাটলিয়নসমূহ নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করবে। র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন রাজধানীতে আজকে থেকেই নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে কনসার্ট রয়েছে। আগামীকাল প্রধান অনুষ্ঠান রমনা বটমূলে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও চারুকলা থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা হবে, রবীন্দ্র সরোবর ও মানিক মিয়া এভিনিউতেও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান রয়েছে। আমাদের মোটর সাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেক পোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহক আছে। আমরা অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে নববর্ষের অনুষ্ঠানটি যাতে সুষ্ঠুভাবে করা যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
শহিদুর রহমান বলেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী জোরদার করা হয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরণের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র্যাব সাইবার মনিটরিং টীম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে আগত মহিলাদের ইভটিজিং রোধকল্পে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ কোন ধরণের হেনস্থার স্বীকার হলে অবশ্যই কর্তব্যরত র্যাব সদস্যদেরকে জানাবেন। আমরা কঠোর হস্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
র্যাব ডিজি বলেন, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে র্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং সম্পন্ন করা হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সুইপিং পরিচালনার পাশাপাশি র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
সারা দেশে র্যাবের সকল ব্যাটালিয়নসমূহ নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটর সাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট দুই হাজার ৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণপূর্বক বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোন ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছিনা। যে কোন নাশকতা হামলা মোকাবেলায় র্যাব স্পেশাল ফোর্স-এর কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
র্যাব প্রধান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রত্যেকটি উৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দুর্গাপূজা, বিজয়দিবস, বড়দিন, ইংরেজী নববর্ষ, একুশে ফেব্রুয়ারি, সর্বশেষ রমজানের ঈদেও নিরাপত্তা নিয়ে কোন আশঙ্কার সৃষ্টি হয়নি। আগের বছরগুলোর ন্যায় এ বছরও অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে সারা দেশব্যাপী বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।