ঢাকার ধামরাইয়ে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা-নাশকতা ও হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ও এসআই এসএম কাউসার সুলতানের নেতৃত্বাধীন পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম বুধবার রাতে তাকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নিরিবিলি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ঢাকার ধামরাই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে। তার গ্রেফতারের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে মিষ্টি বিতরণ করেন।
একাধিক সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলন ও ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এই নেতার নেতৃত্বে হাজার-হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নামেন। একপর্যায়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় হামলা, গুলিবর্ষণ ও নাশকতা সৃষ্টি করে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি ঘটান।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সুতিপাড়া ইউনিয়নের কালামপুর বাসস্ট্যান্ড, সদর ইউনিয়নের শরীফবাগ বাজার ধামরাই পৌর শহরের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢুলিবিটা বাসস্ট্যান্ড, থানারোড বাসস্ট্যান্ড, ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ড ও হার্ডিঞ্জ সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে রণক্ষেত্র হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অগ্রভাগে নেতৃত্বদানকারী ধামরাই থানার তৎকালীন ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ, এসআই রাজু মণ্ডলের উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেধাবী ছাত্র ও ধামরাই পৌর শহরের কায়েতপাড়া মহল্লার বাসিন্দা আফিকুল ইসলাম সাদ। আহত ও অঙ্গহানি হয় শত শত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার।
এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হলেও পার পেয়ে যান ধামরাই থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম শেখ, এসআই পাভেল মোল্লা, ও এসআই রাজু মন্ডলসহ পুলিশ সদস্যরা।
মামলায় গ্রেফতার এড়াতে ৫ আগস্টের পর থেকে এসব নেতাকর্মী এ মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পরও শেষ রক্ষা হয়নি তারা। অবশেষে বুধবার রাতে সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ এম এম হোসেনকেও গ্রেফতার হতে হলো ধামরাই থানা পুলিশের হাতে।
বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ঢাকার ধামরাই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছেন।
ধামরাই থানার ওসি পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনে হতাহত ও নাশকতার ঘটনায় মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের কাউকে ক্ষমা করা হবে না। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হবে।