উপ-সম্পাদকীয় ডেস্ক, আজনিউজ২৪ঃ পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়া খুললেই দেখি নারী ধর্ষণ! অবস্থা দেখে বোঝা দায় যে কোন দেশে বাস করি। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্ষণ পাপ কাজ, অস্বাভাবিক বিষয়। আর রাষ্ট্রিয় আইনে উল্লেখ আছে “অপ্রকাশিত সম্পর্কে জড়ানো আর জোরপূর্বক মেলামেশা নিষিদ্ধ এবং তা ধর্ষণ বিবেচিত হয়”। ধর্ষণ ঘৃণিত কর্ম যা সামাজিক রীতিনীতি পারিবারিক মূল্যবোধেরও বিরোধী। বর্তমানে মানুষের কর্মবোধ এত নীচে যাচ্ছে তা বলা বাহুল্য। মানব সভ্যতার ভেতর আজ প্রবেশ করেছে পশু সভ্যতা। এ কারণেই এখন রাস্তাঘাটে নারীদের বিবস্ত্র করার দৃশ্য আমাদের দেখতে হচ্ছে। দেখতে হচ্ছে কত নির্মম আমাদের সমাজ। গোটা বাংলাদেশে নারীরা আজ লাঞ্চিত!কলঙ্কিত এই দেশ।
অপকটে স্বীকার করতে হচ্ছে মানবকূল আর পশুত্ব সমাজের মাঝে খুব একটা ব্যবধান দেখিনা, ধর্ষণ নামক মহামারী রোগ বোধ সম্পন্ন মানুষ বিবেক বিচ্যুত বোবা প্রাণী দুমেরুর দুজাতকে কাছাকাছি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
ধর্ষণ সমাজের আনাচে কানাচে আছে তা স্বীকৃত সত্য? সবাই ধর্ষককেও চেনে জানে কিন্তু প্রতিকার নাই! তাই ধীর ধীরে সমাজে অপকর্মটি স্বাভাবিক প্রথা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সচেতন মহলের মতে
ধর্ম, দেশ, পারিবারিক সম্প্রতি বজায় রাখতে ধর্ষণ নামক রোগকে ধনুষ্টংকার রোগের ন্যায় দমন করতে হবে, নয়তো চূড়ান্ত ভাঙ্গনের হাত হতে রাষ্ট্র সমাজ পরিবারকে রক্ষা করা যাবে না।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এদেশ থেকে ধর্ষণ স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে হলে আমাদের প্রসাশনকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। যা নিম্নরূপ-
১. ধর্মমতে প্রমাণস্বরূপ ১০০ বেত্রাঘাত ও জনসম্মুখে পাথর নিক্ষেপে হত্যা।
২. দেশের প্রচলিত আইনে অসম্মতিতে অবৈধ যৌনাচারে মিলিত হলে প্রমাণসাপেক্ষে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সর্বশেষ ধারায় মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা রয়েছে তার বাস্তবায়ন জুরুরি হয়ে পড়েছে।
৩. আইন প্রয়োগ ছাড়াও উত্তরণের আরো উপায় আছে। দেশের সকল প্রার্থনালয়ে ধর্ষণের কুফল ইবেন মসজিদের ইমামদের নির্দেশনা দেয়া খুতবায় ধর্ষণের ব্যাপকতা সম্পর্কে মুসল্লিদের সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করা।
৪. মাদক ও পর্নোগ্রাফি ধর্ষণের জন্য বিরাট অংশ দায়ি। সুতারং মাদকসেবন পর্নোআসক্তদের শাস্তিস্বরুপ আইনের আওতায় নেয়া দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা।
৫. ধর্ষণ রোধে মিডিয়াও বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ভিকটিমের পরিচয় ঠিকানা গোপন রাখা অবশ্যই বাঞ্ছনীয়, শুধু ধর্ষকের ছবি পরিচয় ফলাও ভাবে প্রচার করে ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
৬. ধর্ষণের জন্য শুধু যে পুরুষরা দায়ী তা নয়? নারীর বেহায়াপনা চাল-চলন পোষাক, পরিবেশ, মনমানসিকতা তথাকথিত পশ্চীমা স্টাইল ও ভীনদেশী অপসংস্কৃতি অনুসরণ করা ধর্ষণের অনেকগুলো কারনের অন্যতম কারণ তবে একমাত্র কারণ নয়।
৭. সর্বোপরি উপযুক্ত সময়ে অভিভাবক কর্তৃক সহজে ছেলে মেয়েদের বিবাহের ব্যবস্থা করে দেয়া গেলে ধর্ষণ নিরোধক সুফল পাওয়া সম্ভব।
৮. ধর্মবই পাঠ্য অবশ্যক, নিজ বিবেক, সামাজিক দায়বদ্ধতা, আইনের সঠিক প্রয়োগ, গণসচেতনতা বৃদ্ধি, পাশাপাশি ধর্ষকের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক বিচ্যুতি বাস্তবায়ন করা গেলে ধর্ষণ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
লেখকঃ কবি ও প্রাবন্ধিক