উপ-সম্পাদকীয় ডেস্ক :
মানুষের জন্মের পর থেকেই তার পথ চলা শুরু।
আর যদি সেই পথেই হয় তার জন্য মরণ ফাঁদ !
তবে তা কেমন হয় ?
একটি দেশ তা রাস্তার উন্নতির কারণে তার অর্থনৈতিক উন্নতি বৃদ্ধি পায়।
মানুষ জীবন চলার পথে প্রতিনিয়ত তাকে কোনো না কোনো পথ ব্যবহার করতে হয় ।
আর সেই পথ আধুনিক যুগে বিভিন্ন পন্থায় উন্নতি করার চেষ্টা চলছে।
রাস্তা সড়ক-মহাসড়ক অলিগলি আমাদের মানুষের জীবন জুড়ে রয়েছে।
আর সেই রাস্তা যদি ভাঙাচোরা হয়। যদি চলার অনুপোযোগী হয়। তাহলে তার থেকে কষ্ট আর কিছুতেই হতে পারে না।
একটি ভালো রাস্তা একটি সমাজকে বদলে দিতে পারে।
রাস্তা হতে হবে সুন্দর সমান। রাস্তা থাকতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। রাস্তার মাঝে কোন প্রকার ময়লা আবর্জনা থাকলে চলবে না। কোন ইট পাথরের টুকরা থাকলে চলবে না। কোনরকম ভাঙ্গা কাচের টুকরা ,তারকাটা।
রাস্তা পরিষ্কার না হলে যানবাহনের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।মানুষকে পড়তে হয় অনেক বিড়ম্বনায়।
পৃথিবীতে যে দেশের রাস্তা যত উন্নত সে দেশ তত উন্নত।
রাস্তা তৈরি করতে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তাতে কি আমরা কোন ভুল ধরতে পারি? যদি ভুল ধরতে না পারি তাহলে সারা বাংলাদেশের রাস্তার চিত্র এমন কেন?
জনগণ এক বেলা না খেয়ে থাকতেও রাজি আছে। কিন্তু রাস্তায় চলতে গিয়ে ঝাকিতে, গাড়ি দুর্ঘটনায় জীবন হারাতে চায় না। যদি কোন রুগিকে রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নেয়া হয় সেই বোঝে ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে চলার সময় তার শরীরের মধ্যে কেমন লাগে?
বাংলাদেশ সরকার রাস্তা করতে টাকা তো কম দেয় না।
তাহলে রাস্তা ভালো করতে সমস্যা কোথায়?
একটি বাড়ির ছাদ যদি ১০০ বছর পরেও ঠিক থাকে তাহলে রাস্তায় কেন পিচঢালার পরেই তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় ভেঙে যায়।
একটি রাস্তা করার সময় জনগণকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সে দুর্ভোগ জনগণ হাসিমুখে মেনে নেয়। কিন্তু রাস্তাটা হবার পরে তা যদি আবার পরক্ষনেই ভেঙে যায় তাহলে জনগণের মনে কতটা কষ্ট লাগতে পারে?
তাছাড়া এ রাস্তার করার খরচ জনগণের পকেট থেকেই নেয়া হয়।
জনগণ এখন ১ কেজি চালের ফয়সা চায় না। জনগণ চায় যে রাস্তায় তারা চলে সে রাস্তাটা একটু যেন পথ চলার মত হয়।
ঢাকা শহরের বেশকিছু রাস্তায় আমরা কি দেখতে পাই ?
রাস্তার কাজ তারা সমাপ্ত করে চলে যায়। সে রাস্তায় অনেক উঁচু-নিচু থাকে ।লেভেলিং ভালো হয়না ।
রাস্তার মাঝে সিটি কর্পোরেশনের যে ম্যানহোলের ঢাকনা থাকে, সেই ঢাকনা তারা রাস্তা লেভেলিং করে যায় না। সেই ঢাকনা হয় অনেক উঁচু থাকে। না হয় রাস্তা থেকে নিচে পড়ে যায়। যখন একজন গাড়িচালক দূর থেকে দেখতে না পারে ; তখন সে গাড়ি হঠাৎ যদি ব্রেক করে অথবা ডাইনে-বাঁয়ে কেটে যেতে চায় তাহলে পিছনের গাড়ি অথবা তার আশেপাশে গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগাটাই স্বাভাবিক। এভাবেই প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ রাস্তাঘাটে মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। যদি রাস্তা ভালো হয় তাহলে মানুষ অনেকটাই বেঁচে যাবে। পঙ্গু হাসপাতালে গেলে দেখা যায় মানুষের কি বিবর্ণ কষ্ট। রাস্তায় দুর্ঘটনার ফলে, রাস্তা খারাপ থাকার কারণে অনেক মানুষের পরিবার নিঃশেষ হয়ে যায়। পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাত পা হারায়। অথবা চিরতরে সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। তার পরিবারের সদস্যকে পড়তে হয় নানান সমস্যায়।
বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেক জেলায় সড়ক প্রকৌশল অধিদপ্তর করে দিয়েছে। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জনগণের জন্য ভালো রাস্তা তৈরি করা। সরকার সব সময় জনগণের ভালো চায় । আর সরকারি লোক গুলো আমাদের মত মানুষও বটে। তারাও রাস্তায় চলে। কিন্তু রাস্তার দেখ ভালো করার দায়িত্ব তাদের উপরে। তারা তাহলে কি দায়িত্ব পালন করছেন ?
আর সরকারের যিনি দায়িত্বে আছেন এগুলো দেখার জন্য। এবং দলীয় যে জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তারাও তো এই দায় এড়াতে পারে না! রাস্তা খারাপ হলে তার নির্বাচনী এলাকার জনগণ রাস্তায় উঠে তাকে গালাগালি করে। শুধুমাত্র এ রাস্তার কারণে পরবর্তীতে অনেকেই আর নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারে না। অথবা দলীয় মনোনয়ন পেতে পিছিয়ে পড়ে। কারণ যখন দলীয় গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে জরিপ করে তখন ভোটার সাধারণ জনগণ সে নেতার বিরুদ্ধে কথা বলে।
আসুন আমরা সকলে মিলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে একযোগে কাজ করি।
আমার কথা হল সব জায়গায় ব্যবসা খুঁজলে হবে না। এই রাস্তা দিয়ে আপনি চলেন। আপনার বাবা-মা চলে। আপনার সন্তান প্রতিনিয়ত স্কুলে যায়। আপনার আত্মীয় পরিজন প্রতিনিয়ত এই পথ চলে। যখন আপনার বড় বিপদ হয়। কোথাও দ্রুত যাওয়ার প্রয়োজন হয়। অথবা যদি আপনার মা বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন এই রাস্তা দিয়েই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।তখন যদি রাস্তা খারাপ হয়, হাসপাতালে যাবার পথে রাস্তা খারাপ হবার ফলে দুর্ঘটনায় আপনারা আবার ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাহলে আপনাদের উপায় কি?
এর একটি উপায় হচ্ছে। আপনার যেখানে যে দায়িত্বে আছেন ।সড়ক বিভাগের প্রত্যেকে আপনাদের ঈমানী দায়িত্ব নিয়ে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ভালো পরিকল্পনা নিয়ে রাস্তাগুলো প্রশস্ত করুন। রাস্তাগুলো ভালোভাবে নির্মাণ করুন। রাস্তা গুলো ভালভাবে মেরামত করুন। যাতে করে আমাদের সমাজের মানুষের কোন কষ্ট না হয় পথ চলতে।
বাংলাদেশের যে সড়কই হোক। প্রত্যেক সড়ক নির্মাণের আগে সঠিক পরিকল্পনা হাতে নিয়ে সড়ক নির্মাণ করতে হবে। যাতে করে মানুষের পথ চলতে কোন কষ্ট না হয়। যাতে করে মানুষ এই পথের জীবন না হারায়। যাতে করে এ পথে মানুষের স্বপ্ন ভেঙে না যায়। যাতে করে এ পথে আমার আপনার সন্তান কষ্টে না পরে।
মৃত্যুর কোলে ঢলে না পরে। যাতে করে এ আপনার,আমাদের বা অন্য কারো জীবন নিঃশেষ হয়ে না যায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্বাধীন করে গিয়েছেন। এই বাংলার দুঃখী মানুষের জন্য সে জীবনকালে অনেকটা সময় জেলে কাটিয়েছেন। এবং তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। এদেশকে একটু ভালো স্থানে নিয়ে যাবার জন্য।
আর আপনারা অফিসে বসে এতোটুকু দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না! যে দায়িত্বে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটু ভালো থাকবে। আপনার নিজের দেশ একটু উন্নতি হবে। পারবেন না আপনার নিজের মাতৃভূমিকে একটু ভালবাসতে? আপনারা কাজ করুন। আপনারা আপনার নিজের জন্য কাজ করুন। কাজ করুন আপনারা আপনার নিজের সন্তানের জন্য। কাজ করুন এই সমাজের জন্য। এই রাস্তায় আপনার নিজের সন্তান চলাচল করে। রাস্তা ভেঙ্গে যদি একটি ইটের টুকরো গাড়ির চাকায় ছিটকে গিয়ে আপনার সন্তানের বুকে লাগে। আর তখন সেই সন্তান যদি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তখন এই কষ্ট শুধু আপনার একার নয়। এ কষ্ট আমার সমাজের। আমার দেশের। আমার সকল মানুষের।
একটি সন্তানকে বাঁচাতে,একটি মানুষকে বাঁচাতে, একটি দেশকে বাঁচাতে, একটি সমাজকে বাঁচাতে, একটি পরিবারকে বাঁচাতে, আপনারা দয়া করা রাস্তা গুলো সঠিকভাবে নির্মাণ করুন।
কাজী আনিসুর রহমান তৈমুর
সদস্য
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি
১৪ শ্রাবণ ১৪২৮
২৯ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার
মগবাজার,হাতিরঝিল। ঢাকা।