আবহাওয়ার পরিবর্তন ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর কিছুটা কমলেও মধ্যাঞ্চলে বাড়ছে বন্যার পানি। বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো জায়গার অভাবে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন লাখো দুর্গত মানুষ। ১২ জেলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে দেশের ১৭টি জেলার বিভিন্ন এলাকা এখন বন্যা কবলিত। এসব দুর্গত এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের সঙ্গে আশ্রয় নিয়েছে গবাদিপশুও।
গাইবান্ধার দুর্গত এলাকায় মসজিদ ডুবে গেছে। মুসুলিরা নামাজ পড়ছেন নৌকায়। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি রয়েছে বিপদসীমার উপরে। ধরলা নদীর স্রোতে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে কালোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। জামালপুরে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে কমলেও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ফরিদপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ায় প্রতিদিনই ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদ সীমার ১০৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বাড়ায় পানিবন্দি ১০ হাজার পরিবার। গতকাল শুক্রবার (১৭ জুলাই) বিকেল থেকে ক্রমান্বয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে শুরু করে। ফলে শেরপুরের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী, বলায়েরচর, কামারেরচরসহ আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। এদিকে ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার উপরে বইছে। এতে ফরিদপুর-চরভদ্রাসন আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে লোকালয়ও। রাজবাড়ীতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে পাট, রোপা আমন ও সবজি ক্ষেতসহ মোট ৪শ হেক্টরের বেশি জমির ফসল।
উত্তরের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে কয়েকটি নদ-নদীর পানি এখনও বইছে বিপৎসীমার উপরে। ঘরবাড়ি ডুবে থাকায় উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি মানুষ। হবিগঞ্জে নদ-নদীর পানি উপচে চারটি উপজেলার গ্রামীণ জনপদ প্লাবিত হয়ে আছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। টাঙ্গাইলে সকল নদ-নদীর পানি বাড়ায় নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।
বন্যায় মানিকগঞ্জের সাথে হরিরামপুর উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পদ্মায় প্রবল স্রোত ও ঘাটে অতিরিক্ত গাড়ির চাপে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় পারাপারের অপোয় আছে ৬ শ’রও বেশি যানবাহন।
নওগাঁয় আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৩টি উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় দেড় লাখ লোক পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। সরকারের প থেকে বন্যা কবলিত মানুষকে সব সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী । তবে নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে নেত্রকোনা ও বগুড়ায়।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানি বাড়লে দেশের ২০ থেকে ২৪ জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়বে। সূত্র : চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর ও এটিএন বাংলা
দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর কিছুটা কমলেও মধ্যাঞ্চলে বাড়ছে বন্যার পানি। বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন লাখো দুর্গত মানুষ
আবহাওয়ার পরিবর্তন
0 Views