১২ কোটি বছরেরও বেশি পুরোনো দুই মাথাওয়ালা ডাইনোসরের একটি জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। হাইফালোসরাসের নামের ডাইনোসরটির গলা অন্য ডাইনোসরের তুলনায় ছোট ছিল। আদি আমলের প্রাথমিক ক্রিটেসিয়াস যুগে বাস করত জলজ এই প্রাণী। জীবাশ্মের নমুনায় দুই মাথাওয়ালা ডাইনোসরের লক্ষণ থাকায় বিজ্ঞানীরা একে বিরল বিকাশগত অসংগতি বলে আখ্যা দিচ্ছেন। ভ্রূণ যমজ প্রাণীতে বিভক্ত হতে শুরু করার সময় যখন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়, তখন দুটি মাথাওয়ালা একটি জীব তৈরি হয়। সেই কারণে ভিন্ন ধরনের ডাইনোসরের দেখা মিলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৭ সালে উত্তর-পূর্ব চীনের ইক্সিয়ান ফরমেশন অঞ্চলে এই জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। জীবাশ্মটি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আধুনিক সময়ে সাপ, টিকটিকি ও কচ্ছপের মতো সরীসৃপে দুটি মাথা দেখা গেলেও অতীতের কোনো প্রাণীতে এমন ত্রুটি পাওয়া যায়নি। আর তাই জীবাশ্মটি মেরুদণ্ডী জীবাশ্মের ইতিহাসে ত্রুটিযুক্ত প্রাচীনতম উদাহরণ। প্রাথমিক সরীসৃপদের জৈবিক ও বিবর্তনের নতুন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে জীবাশ্মটি।
প্রাণীর মেরুদণ্ড যে সময় অনুদৈর্ঘ্যভাবে বিভক্ত হতে শুরু করে, তখন ত্রুটির কারণে দুটি সমান্তরাল ঘাড় তৈরি হয়। এতে দুটি স্বতন্ত্র খুলির বিকাশ ঘটে। এটি একটি অসম্পূর্ণ যমজ প্রক্রিয়া। জেনেটিক ত্রুটির কারণে সংযুক্ত মাথার বিকাশ ঘটে। সরীসৃপ ও অন্য মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে এমন ত্রুটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক।
মাত্র ৭০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের দুই মাথাওয়ালা হাইফালোসরাস জীবাশ্মটি সম্ভবত নবজাতক ডাইনোসরের, যা ডিম ফুটে বের হওয়ার পর বেঁচে ছিল না বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংক্ষিপ্ত আয়ুষ্কালের কারণে বিকাশের অনেক তথ্য নেই জীবাশ্মটির মধ্যে। জন্মগত ত্রুটির প্রাচীন এই প্রমাণ অনেক বিরল তথ্য জানার সুযোগ করে দিচ্ছে।