ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: দিল্লীর আকাশ ছেয়ে আছে ঘন ধুয়াশায়। সামান্য দূরের জিনিসই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। বাইরে বের হলেই চোখ দিয়ে ঝরছে পানি। নিশ্বাস নিতে গেলেও আটকে যাচ্ছে দম।
এমনই ভয়াবহ অবস্থায় পতিত হয়েছে দিল্লির বাসিন্দারা। তবে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী খোদ ভারতীয় নাগরিকরাই। তারা নিজেরা কষ্ট তো পাচ্ছেই, পাশাপাশি পুরো পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কর্মকাণ্ড।
কারণ আর কিছুই নয়, বায়ু দূষণ। দীপাবলির পর থেকেই ভারতের দিল্লিতে বায়ু দূষণমাত্রা বাড়ছিল। এবার তা বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সাতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সব সরকারি অফিস বন্ধ রাখতে বাধ্য হলো দিল্লি।
কর্মীরা এ কয়দিন বাড়ি থেকে কাজ করবেন। এ ছাড়া তিনদিন ধরে বন্ধ থাকবে সব নির্মাণকাজও। যদিও দেশটির সুপ্রিম কোর্ট লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তা না করে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বায়ুতে দূষণমাত্রার সূচকের গড় ৪৭১-এ পৌঁছেছিল। কোনো কোনো এলাকায় তা ৪৮০ পেরিয়ে যায়।
তারপরই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এনভি রামানার বেঞ্চ পরামর্শ দেন, দূষণের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে আগামী দুই দিন দিল্লি শহর সম্পূর্ণ লকডাউন করা হোক।
এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল একটি জরুরি বৈঠকে বসেন। দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর লকডাউন জারি করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন। বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ জারি করে দূষণ কমানোর পক্ষেই থাকেন প্রশাসনিক কর্তারা।
বৈঠকে দূষণের কারণ হিসেবে ওঠে আসে দীপাবলি, এনসিআর এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানার ফসল পোড়ানোর কারণ। এই মৌসুমে শস্যের পড়ে থাকা অংশ পুড়িয়ে ফেলেন কৃষকরা। আর সেই ধোঁয়ায় মারাত্মক দূষণ ছড়ায়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকবছর ধরে এই সমস্যার মুখে পড়ে দিল্লির পরিবেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল। এ নিয়ে গতবছর সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়। এবারও সেই একই সমস্যা।