আফগানিস্তান থেকে ২০২১ সালের আগস্টে বিশৃঙ্খলভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সময় তালেবান যখন আবার ক্ষমতায় ফেরে, সে সময় পশ্চিমা–সমর্থিত কাবুল সরকার হুড়মুড় করে ধসে পড়ে। তখন ভারত বাধ্য হয়ে তার দূতাবাস দ্রুত বন্ধ করে কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নেয়।
চার বছরের কিছু বেশি পর, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নেতৃত্বাধীন আফগান প্রতিনিধিদলের জন্য লালগালিচা বিছিয়েছে।
ভারতে তালেবানের কোনো নেতার এটাই প্রথম সরকারি সফর। মুত্তাকির সপ্তাহব্যাপী এ সফরকে বলা হচ্ছে যুগান্তকারী। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা মুত্তাকি বিশ্বসংস্থার অস্থায়ী ভ্রমণ ছাড়পত্র নিয়ে ভারতে এসেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব ঠেকাতে নয়াদিল্লির এ পদক্ষেপ বাস্তববাদী নীতি অনুসরণের অংশ। কারণ, পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্তে হামলা–পাল্টা হামলায় ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।
তবে কিছু বিশ্লেষকের মতে, তালেবান নেতৃত্বকে আতিথ্য জানিয়ে ভারত আসলে তালেবান সরকারকে বৈধতা ও কার্যত স্বীকৃতি দিচ্ছে; যে সরকার বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক স্বীকৃতি পেতে এখনো সংগ্রাম করে চলেছে।
তাহলে প্রশ্ন হলো—এখন কেন ভারত তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে। তাদের বৈঠকে কী হয়েছে। ভারত কী আশা করছে তালেবানের কাছ থেকে। আর তালেবানের লাভই–বা কোথায়।
ভারত–তালেবান বৈঠকে কী হলো
তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি আফগান বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে ভারতে এসেছেন কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে।
গত শুক্রবার মুত্তাকি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে নয়াদিল্লি ঘোষণা দেয়, তারা কাবুলে নিজেদের দূতাবাস আবার খুলবে।
এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আফগানিস্তানের জাতীয় উন্নয়ন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদারে সহায়তা করবে।’ তিনি আরও আশ্বস্ত করেন, ভারত আফগানিস্তানের ‘সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
কিছু বিশ্লেষকের মতে, তালেবান নেতৃত্বকে আতিথ্য জানিয়ে ভারত আসলে তালেবান সরকারকে বৈধতা ও কার্যত স্বীকৃতি দিচ্ছে; যে সরকার বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক স্বীকৃতি পেতে এখনো সংগ্রাম করে চলেছে।
মুত্তাকি ভারতকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ বলে আখ্যা দেন। এক যৌথ বিবৃতিতে নয়াদিল্লি ও তালেবান জানায়, তারা ‘ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবে ও নিয়মিত আলোচনায় থাকবে’।
আফগান নেতৃত্ব ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আফগানিস্তানের খনিশিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এতে দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
ভারত জানিয়েছে, তারা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা ও উন্নয়ন প্রকল্পে নিজেদের ভূমিকা আরও বাড়াবে।
মোদি সরকার মুত্তাকির উত্তর প্রদেশ সফরও সহজ করে দিয়েছে। সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার প্রভাবশালী ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ অবস্থিত।
গত সোমবার মুত্তাকি ঘোষণা দেন, কাবুল ও ভারতের কয়েকটি শহরের (যেমন পাঞ্জাবের অমৃতসর) মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শিগগিরই চালু হবে।
এখন কেন ভারত তালেবানকে কাছে টানছে
ঐতিহাসিকভাবে ভারত তালেবানকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রক্সি হিসেবে দেখে এসেছে। তালেবানের অনেক নেতাও পাকিস্তানে রক্ষণশীল ধারার মাদ্রাসায় পড়েছেন। এসব মাদ্রাসা ১৯৮০–এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী মুজাহিদিন আন্দোলনকে সহায়তা দিয়েছিল। সেই মুজাহিদিনদের মধ্য থেকেই তালেবানের উদ্ভব।
আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আফগানিস্তানের জাতীয় উন্নয়ন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদারে সহায়তা করবে। ভারত আফগানিস্তানের ‘সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
—এস জয়শঙ্কর, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১৯৯৬ সালে তালেবান প্রথমবার ক্ষমতায় এলে ভারত কাবুলে নিজের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। শুধু তা–ই নয়, তারা আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী জোট ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স’কে কূটনৈতিক সমর্থন, নানা ধরনের সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করে। লক্ষ্য ছিল, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব ঠেকানো ও আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা। এ জোটকে ইরান ও রাশিয়াও সমর্থন দিয়েছিল।
২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর আগ্রাসনে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হয়। এর আগপর্যন্ত পাকিস্তান ছিল তিনটি দেশের একটি, যারা তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
তালেবান সরকারের পতনের পর ভারত আবার দূতাবাস খোলে। কিন্তু তালেবানকে তখনো পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলেই বিবেচনা করে। আফগানিস্তানে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনে একাধিক বোমা হামলার জন্য ভারত তালেবান ও তার মিত্রদের দায়ী করেছিল।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন, তারা ২০ বছর ধরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তালেবান নেতা ও যোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে।
১৯৯৬ সালে তালেবান প্রথমবার ক্ষমতায় এলে ভারত কাবুলে নিজের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, তারা আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী জোট ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স’কে কূটনৈতিক সমর্থন, নানা ধরনের সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করে। লক্ষ্য ছিল, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব ঠেকানো ও আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা। এ জোটকে ইরান ও রাশিয়াও সমর্থন দিয়েছিল।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র–ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার ও তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর ভারত আবার দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়। সব আফগান নাগরিকের জন্য, এমনকি শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্যও ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
তবে এক বছর পরই ভারত কূটনৈতিকভাবে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। ভারত আফগানিস্তানে কয়েকজন কূটনীতিক পাঠায়। তাঁরা মূলত ভারতের মানবিক সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা দেখাশোনা করতেন। এরপর গত দুই বছরে তালেবান ভারতের মুম্বাই ও হায়দরাবাদে আফগান কনস্যুলেটগুলোতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, ভারতের কোনো প্রকাশ্য আপত্তি ছাড়াই।
ইতিমধ্যে ভারতীয় কূটনীতিকেরা বিদেশে তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুবাইয়ে মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
এদিকে পাকিস্তান–তালেবান সম্পর্কে ভয়ানক অবনতি ঘটেছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে, আফগান শাসকেরা পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)–সহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। এই গোষ্ঠীগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে বহু প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। তালেবান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিশ্লেষকদের ভাষায়, এই পরিবর্তিত আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটেই ভারত এখন মুত্তাকিকে স্বাগত জানিয়েছে।
নয়াদিল্লিতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক প্রভীন দোন্ঠি বলেন, ‘অতীতে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে পাকিস্তানকে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ দেওয়া ভারতের জন্য ক্ষতিকর হয়েছিল। তাই এবার নয়াদিল্লি কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করছে।’
দোন্ঠি বলেন, ‘এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক; যা শুধু মতাদর্শের কারণে উপেক্ষা করা যায় না। তালেবানের রক্ষণশীল নীতি ও ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের মতাদর্শে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীরা (চীন–পাকিস্তান) যাতে এ সুযোগ (তালেবানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের ব্যবহার) নিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, কাবুলে চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য লেনদেনের প্রেক্ষাপটেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।’
দোন্ঠি বলেন, ‘এ সফর (মুত্তাকির) দেখাচ্ছে, ভারত এখন মতাদর্শের সীমা ছাড়িয়ে বাস্তবতার ভিত্তিতে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে প্রস্তুত।’
অন্যদিকে আফগানিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক গৌতম মুখার্জি বলেন, ‘১৯৯০–এর দশকের তালেবান এখন আগের মতো পাকিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।’
অতীতে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে পাকিস্তানকে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ দেওয়া ভারতের জন্য ক্ষতিকর হয়েছিল। তাই এবার নয়াদিল্লি কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করছে।
—প্রভীন দোন্ঠি, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক
‘নতুন তালেবান তুলনামূলকভাবে বেশি বিশ্ব–সচেতন ও দূরদর্শী’, বলেন গৌতম মুখার্জি। ‘তাদের আফগানিস্তানের বৃহত্তর স্বার্থও দেখতে হয়।’
অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক মনে করেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক শতাব্দীপ্রাচীন, সেই মোগল আমল পর্যন্ত বিস্তৃত। ভারতের প্রতি আফগানদের আত্মীয়তার একটা বোধ সব সময় ছিল। মানবিক সহায়তার কারণেও ভারত আফগানদের কাছে সমাদৃত। ‘হিন্দুস্তান শব্দটা আফগানদের মানসে এখনো এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে’, বলেন তিনি।
২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস পুনরায় খোলার দায়িত্বে থাকা এই কূটনীতিক আরও বলেন, তালেবানের প্রথম শাসনামলে ভারতের দূরত্ব ছিল এক ‘বিচ্যুতি’। ভারত তালেবানের কাছে কী আশা করছে
দক্ষিণ এশিয়ায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনাগুলো শনাক্ত ও বিশ্লেষণকারী পোর্টাল ‘সাউথ এশিয়া টেররিজম’–এর নির্বাহী পরিচালক অজয় সাহনি বলেন, ‘ভারতের কাছে এখন এটা পরিষ্কার, তালেবান সরকার সহজে যাচ্ছে না। শুধু ‘‘আমাদের পছন্দ নয়’’ বলে তাদের উপেক্ষা করা চলে না।’
অজয় সাহনি আরও বলেন, ‘আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনে চলতে হবে। তাই তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং এমন শাসনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন জরুরি; যারা উপমহাদেশে ভারতের অবস্থানকে মানতে আগ্রহী।’
ভারতের হিসাব–নিকাশে আফগানিস্তান–পাকিস্তান ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুত্তাকির ভারতে অবস্থানকালে সীমান্তে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি হয়। এতে দুই পক্ষেই অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। একই সময় পাকিস্তান আফগান শরণার্থীদের গণ–নির্বাসন শুরু করেছে। এটি সম্পর্ক আরও খারাপ করেছে।
এ বছরের এপ্রিল মাসে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় আফগানিস্তান ছিল হামলার নিন্দা জানানো কয়েকটি দেশের একটি। ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে; যদিও ইসলামাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ ঘটনায় দুই দেশ মে মাসে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘাত দেশ দুটিকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।
গৌতম মুখার্জি বলেন, ‘তালেবান ও ভারতের ‘‘একই শত্রু’’ আছে। আমাদের দুজনেরই পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্যা। তাই একভাবে আমরা স্বাভাবিক মিত্র।’
যৌথ বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পেহেলগাম হামলার নিন্দা জানানোর জন্য তালেবানের প্রতি ‘গভীর কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেছে এবং তাদের ‘আন্তরিক সমবেদনা’র প্রশংসা করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘উভয় পক্ষই আঞ্চলিক দেশগুলো থেকে উদ্ভূত সব ধরনের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দৃঢ় নিন্দা জানায়’। যদিও বিবৃতিতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দেন যে ‘আফগানিস্তানের ভূখণ্ড কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবে না।’
তালেবানের জন্য এই কূটনৈতিক সম্পর্কের মানে কী
অজয় সাহনির মতে, নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক তালেবানের জন্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তালেবান সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু রাশিয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে এবং তাদের অনেক নেতা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন।
তালেবান প্রতিনিধিদের লালগালিচা সংবর্ধনা দিতে গিয়ে মোদি সরকারকে দেশে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে; বিশেষ করে নারী অধিকার, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ২০২১ সালে রয়টার্সের আলোকচিত্রী দানিশ সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে।
গত সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে আফগান দূতাবাসে মুত্তাকির সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলে বিরোধী নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা সরকারের নীরবতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। পরদিন আফগান কর্মকর্তারা আরেকটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। সেখানে নারী সাংবাদিকেরা সামনের সারিতে বসার সুযোগ পান।