ক’দিন ধরে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছিল জনজীবন। সবাই যেন এক পশলা বৃষ্টির প্রার্থনায় ছিল। অবশেষে রাজধানীতে বৃষ্টি নেমেছে। আর এই বৃষ্টি যেন স্বস্তি নামিয়েছে গরমে অতিষ্ট নগরজীবনে।
সোমবার (২৪ মে) রাত সোয়া ৯টা দিকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি শুরু হয়। সাড়ে ৯টার দিকে পুরো ঢাকাকেই ভিজিয়ে দেয় বৃষ্টি। ঢাকায় রাতে বৃষ্টি নামলেও দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আরও আগে থেকেই বৃষ্টির খবর মিলেছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ক্রস (অতিক্রম করে যাওয়া ঝড়-বৃষ্টি নয়) করা ঝড় না এটা, প্যারিফেরিয়াল উইন্ড হয়। একটা বড় সিস্টেম যখন সমুদ্রে থাকে, তখন বজ্র-মেঘ হয় আশেপাশে। অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বজ্র-ঝড় হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট থেকে চট্টগ্রাম এবং ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল সব জায়গায় বজ্র-ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। রংপুরে হচ্ছে না। রাজশাহী বিভাগেও হবে আজকেই, তবে পরে।’
ইয়াস সম্পর্কিত আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ (২৪ মে) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং ২৬ মে ভোর নাগাদা উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলের নিকট দিয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।