আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিরাজমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে বাতাস বইছে, তার সঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্পও ঢুকছে। সারা দিন ধরে সূর্যের যে তাপ পড়ছে তা ধরে রাখছে জলীয় বাষ্প। ফলে গরমে অস্বস্তির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গায়ে লাগছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাতের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। এ ছাড়া, আজ ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর গতকাল ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কোনো স্থানের বায়ুতে কতটুকু জলীয়বাষ্প আছে অর্থাৎ বায়ু কতখানি শুষ্ক বা ভিজা, আর্দ্রতা দিয়ে তাই নির্দেশ করা হয়। যদি কোনো একটি এলাকার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৭০ থেকে ৯০ শতাংশের মধ্যে থাকে, এমন অবস্থাকে আবহাওয়াবিদেরা তীব্র কষ্টকর দিন হিসেবে চিহ্নিত করেন। অপর দিকে তাপমাত্রা যখন ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে এবং আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের কম থাকে, এমন অবস্থাকে আরামদায়ক দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে কুমারখালী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, রাজশাহীতে ৪০.৪, যশোরে ৪০.২, মোংলায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে এটি কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা যদি ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক হয়। ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয় মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এ সময়টা খুবই শঙ্কার। চর্মরোগ, খিঁচুনি, ক্লান্তিবোধ, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।