মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের নবনির্মিত ‘লিংকন বাথরুম’ উন্মোচন করেছেন। তিনি একে বর্ণনা করেছেন উচ্চমানের স্ট্যাচুয়ারি মার্বেল ও মিরর-ফিনিশ নকশার অসাধারণ সৌন্দর্য হিসেবে। এটি হোয়াইট হাউসের চলমান পুনর্গঠন কার্যক্রমের অংশ বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন, যেখানে দেখা যায় সাদা-কালো মার্বেল ও সোনালি রঙের অলংকরণে সজ্জিত বাথরুমটি।
ট্রাম্প বলেন, বাথরুমটি সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। স্ট্যাচুয়ারি মার্বেল আর মিরর-পলিশড ফিনিশের যে সৌন্দর্য— তা অতুলনীয়।
তবে এই সংস্কার প্রকল্প হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিক ধারা থেকে এক বড় বিচ্যুতি। লিংকন বাথরুম, যা লিংকন বেডরুমের সঙ্গে সংযুক্ত, দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী অবস্থাতেই সংরক্ষিত ছিল। এমনকি অতীতের বড় সংস্কারগুলোর সময়ও এই অংশটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল।
ইতিহাসবিদ ও সংরক্ষণবিদদের সমালোচনা
ট্রাম্পের এই নতুন নকশা নিয়ে ইতোমধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। ইতিহাসবিদ ও স্থাপত্য সংরক্ষণবিদরা বলছেন, ট্রাম্পের ‘অতিরিক্ত আড়ম্বরপূর্ণ সংস্কার’ হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে নষ্ট করছে। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প এর আগেও পূর্ব উইং ধ্বংস, রোজ গার্ডেন পেভমেন্ট, এবং ওভাল অফিসে সোনালি থিমযুক্ত সাজসজ্জার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন— যা হোয়াইট হাউসকে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত প্রচারের প্রতীকে পরিণত করছে।
এক ইতিহাসবিদ মন্তব্য করেছেন, এটি প্রেসিডেন্টের ঐতিহ্যের বাণিজ্যিকীকরণ। হোয়াইট হাউস এখন মার-আ-লাগোর প্রতিরূপে রূপ নিচ্ছে।
ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প করদাতাদের অর্থ ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিকে নিজের রাজনৈতিক ইমেজ গঠনের উপকরণে পরিণত করছেন।
পূর্ব উইং ধ্বংস নিয়ে বিতর্ক
এই উন্মোচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প প্রশাসন পূর্ব উইং ধ্বংসের নির্দেশ দেয়। হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ একে গঠনগত সংস্কার বলে ব্যাখ্যা করলেও এ বিষয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ও অর্থায়ন নিয়ে স্বচ্ছতা দাবি করেছে।
হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লিংকন বাথরুমের সংস্কার প্রেসিডেন্টের নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো সরকারি নথি এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
ঐতিহাসিকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কেবল হোয়াইট হাউসের স্থাপত্যগত ঐতিহ্যকেই নয়, প্রেসিডেন্ট পদটির প্রতীকী মর্যাদাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

