যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখন তা বিশ্বজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। এবার এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ডেনমার্কের নাগরিকরা ব্যঙ্গাত্মকভাবে ক্যালিফোর্নিয়া কিনতে চেয়ে একটি অনলাইন পিটিশন চালু করেছেন। ইতোমধ্যেই এই প্রচারণায় ২ লাখের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
‘ডেনমার্কিফিকেশন’ নামক ওয়েবসাইটে চালু করা পিটিশনে ক্যালিফোর্নিয়া কেনার জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্রাউডফান্ডিং পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পিটিশনে বলা হয়েছে, এই কেনার আলোচনার জন্য ডেনমার্কের সেরা আলোচকরা, বিশেষ করে লেগো কোম্পানির কর্মকর্তারা, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে প্রস্তুত।
এই পিটিশনে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছে, ‘১০০ ভাগ সত্য… আমাদের স্বপ্নে!’ পিটিশনে আরও বলা হয়েছে— ‘আপনি কি কখনও মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে ভেবেছেন?’, ‘ডেনমার্কের জন্য আরেকটু রোদ, তালগাছ আর রোলার স্কেট দরকার?’, ‘এবার আমাদের সেই সুযোগ এসেছে। আসুন, আমরা ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্যালিফোর্নিয়া কিনে নিই!’
পিটিশনে মজার ছলে আরও বলা হয়েছে- ‘আমরা আজীবন ফ্রি ডেনিশ পেস্ট্রি দেওয়ার প্রস্তাব করব যাতে ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়া বিক্রিতে সম্মত হন।’ এই ব্যঙ্গাত্মক প্রচারণায় ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন নামকরণ করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ‘নিউ ডেনমার্ক’—ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন নাম, ডিজনিল্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে হবে ‘হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসেনল্যান্ড’ মিকি মাউসের মাথায় থাকবে ভাইকিং হেলমেট।
পিটিশনটির উদ্যোক্তা জেভিয়ের ডুটোইট, যিনি নিজেকে সুইস-ফরাসি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি জানান, একজন আমেরিকান পর্যটকের কাছ থেকে ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার কথা শুনে তার এই আইডিয়াটি আসে। ডুটোইট বলেন, ‘আমি শুনছিলাম একজন পর্যটক বলছেন, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কিনবেন! তখন আমি ভাবলাম, যদি ট্রাম্প ডেনমার্কের অঞ্চল কিনতে পারেন, তবে ডেনমার্ক কেন ক্যালিফোর্নিয়া কিনতে পারবে না?’
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গ্রিনল্যান্ড কেনার পরিকল্পনার কথা আবার জোরালোভাবে বলেন। তিনি দাবি করেন, ‘গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী এবং গ্রিনল্যান্ডের সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।’
ডেনিশ পার্লামেন্ট সদস্য অ্যান্ডারস ভিস্টিসেন কড়া ভাষায় বলেন, ‘ট্রাম্প যেন গ্রিনল্যান্ড কেনার চিন্তা বাদ দেন!’ এই ব্যঙ্গাত্মক প্রচারণা প্রমাণ করে কিভাবে বিশ্ব ট্রাম্পের অপ্রথাগত নীতিকে কৌতুকের চোখে দেখছে। যদিও এটি কেবল একটি মজার প্রচারণা, তবে এটি কূটনৈতিক অঙ্গনে ট্রাম্পের নীতির প্রতি ব্যঙ্গ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।