চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকা নিজেদের ‘পৈত্রিক সম্পত্তি’ বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম-৫ আসনের জামায়াত ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম। তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঁঞার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,‘হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও দলীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম জোবরা এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অহংকারী ভাষায় ও শিক্ষার্থীদের জন্য অপমানজনক যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা এটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। তার বক্তব্য স্থানীয় সন্ত্রাসীদের অপকর্মকে আড়াল করার প্রচেষ্টা এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক অধিকার ও নিরাপত্তা হরণের প্ররোচনা বহন করছে।’
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে,‘শাখা ছাত্রশিবির সিরাজুল ইসলাম সাহেবের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এটি প্রকৃত সন্ত্রাসীদের দায়মুক্তি দেওয়ার অনুচিত প্রচেষ্টা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক নিরাপত্তা হরণের চেষ্টা।’
এ ছাড়া সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদকও প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে পারেননি জানিয়ে বলা হয়, হাবিবুল্লাহ খালেদের বক্তব্যে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের অপরাধকে লঘু করে কেবল বহিরাগত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অপকর্ম ফুটে উঠেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে ওই কথা বলতে শোনা যায়।
ভিডিওতে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের ওপর। আমরা এ জায়গার মালিক। আমাদের সম্মান করতে হবে। সম্মান দেওয়ার মতো পরিবেশ আমরা গড়ে তুলব। যদি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তাহলে আমরা জনগণ নিয়ে যেটা করার দরকার, সেটাই করব, ইনশাআল্লাহ। আমরা অতীতেও হস্তক্ষেপ মেনে নিইনি, সামনেও মেনে নেব না।’
এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়ে বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম। ক্ষমা চেয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এখানে বক্তব্যের কিছু অংশ অনেকের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপিত হতে পারে। তবে এটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। আমার শব্দচয়নে কিছুটা ভুল হতে পারে, তবে আমার উদ্দেশ্য এমনটি ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গত ১৬ বছর ধরে চবিতে চাকরি করেছি। শিক্ষার্থীরা জানে আমি তাদের কি পরিমাণ স্নেহ করি। আহত ছাত্রদের খোঁজখবর নিয়েছি, সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।ভবিষ্যতে আমি আমার শব্দচয়নের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকব।’
প্রসঙ্গত, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় হাটহাজারী জামায়াত ইসলামী বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এলাকাবাসীর সঙ্গে মীমাংসা বৈঠক করে। সেই বৈঠকেই বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম।