ব্যক্তিগত
আমার কিছু ব্যক্তিগত জোছনা আছে
লুকিয়ে রাখি অদম্য এ বুকের কাছে
বুকের বিতান ছড়িয়ে পড়ে চাঁদের বনে
জোছনা ভোজের আনন্দময় আমন্ত্রণে
চাঁদের বুকে বিনম্র তার রূপের সারি
মধ্যরাতে চাঁদ হয়ে যায় জলকুমারী
জলের শরীর কম্পিত তার হৃদয় ভারে
চমকে ওঠে ঢেউয়ের ফণা জলের ধারে
আমার কিছু ব্যক্তিগত বৃষ্টি আছে
মেঘের খামে পাঠিয়ে দেবো তোমার কাছে
বৃষ্টিগুলো তোমার চোখের অশ্রæ ধারা
কপোল বেয়ে নামবে নদী ছন্দহারা
মন বাঁশরির সুর ভিজিয়ে বৃষ্টি হবে
শ্রাবণ মেঘের সন্ধ্যাগুলো সঙ্গে রবে
ব্যক্তিগত অতীত কথা বলবো কি আর
বুকের দেশে উত্থিত তার স্মৃতির মিনার
আমার কিছু ব্যক্তিগত রৌদ্র আছে
রৌদ্রগুলো রোরুদ্ধমান ছায়ার কাছে
রৌদ্র ছায়ার নকশা আঁকে মনের তুলি
তোমার বুকের উদ্যানে এই হৃদয় খুুলি
ব্যক্তিগত রাত্রি আছে আমার জানি
রাতের বুকে রাত তবু হয় অভিমানী
অভিমানের অশ্রæগুলো করছি জমা
অশ্রæ মুছে প্রেম হয়েছে তিলোত্তমা
আমার কিছু ব্যক্তিগত কষ্ট আছে
কষ্টগুলো বলবো না আর তোমার কাছে
তুমি বরং সুখের জলে কাঁপন তোলো
নিভৃতিতে নিমগ্নতার দুয়ার খোলো
ছাপচিত্রের নকশা
ছাপচিত্র চিনে তোমার নকশা আঁকতে চাই
লিওনার্দোর মনছাপ থেকে মুখচিত্রের
তুলিটি তুলবো
হলুদ রঙের দেহে লাল জড়িয়ে দিলেই তুমি কমলা
কিছু ফুল থেকে গন্ধ লুটে মেখে দিলে
তুমিই তো মনোমুগ্ধ গোলাপ
তোমার গভীর থেকে সুরভিত দীর্ঘশ্বাস হবে
বাতাসের সুখ
তোমার দৃষ্টির ঘোরে অবলা ভোমর যদি হারায় হুস
তবুও তুমিই থাকো অপরাজিতা প্রজাপতি
না আমি তোমাকে ফুল নামে ডাকবো বলে বলছি না
আমি বলছি তুমি ঠিক ফুলের উর্ধের কোনো
মনোজব্দ সৌরভ
যাকে অনায়াসের প্রেমান্ধ বুকের ইজেলে আঁকা যায় জলরঙে
মাঠের দূরত্ব থেকে রোদছাপ
বৃক্ষের ছায়ায় ডোবা পাতাছাপ
অসীম নৈশব্দ থেকে নীলছাপ
সবই তোমার মনছাপের ঝুল
তুমি জলছাপ তুলে ঠোঁটছাপ এঁকে দাও পৃথিবীর মুখে।
খোঁপা খুললেই রাতের নদী
প্রকৃতির মতো বিস্তৃত বিশাল তোমার হৃদয় পৃথিবী
মনের বহর যেনো সমুদ্রময়ী সীমাহীন সম্ভার
তোমার গহনে জাগ্রত উষ্ণতার এক কল্লোলিত প্রাণ
জীবনের সব আঙিনায় তারই প্লাবন
তারই ঢলের সর্বগ্রাসী ঢেউ
প্লাবনে ভাসায় হৃদয়ের সমস্ত ভূমি
খুঁজে পাই সেই ঘ্রাণ সেই স্নিগ্ধ নির্ভার আরাম
যার বুকে জেগে আছে পরিতৃপ্তির সুখ
মগ্নতার মহলে ডুবে যাও যখন
হয়ে ওঠো নৈশব্দের নির্জন বুক
জেগে থাকা জোছনার মতো সুখ বিছায় স্বপ্নের ডানা
রাত্রীর শরীর বেয়ে নেমে আসো বুকের ভেতর
আমার আকাশ জুড়ে হয়ে ওঠো নক্ষত্রের রাত
বুকের ভেতর তুলে নেবো তোমার সমস্ত রজনী
দিনকে আঁচল টেনে বেঁধে দাও খোঁপার ভেতর
খোঁপা খুললেই নেমে আসে রাতের নদী
চোখের কিনার থেকে রাত মুছে আবার
নামে রোদের পাখি
এভাবে রোদের গন্ধ হয় তোমার ঘামের জল
জীবনের পাশে যখন ছায়ার টুকরো হয়ে থাকো
মিশে থাকো নৈশব্দের ভেতর
তখন তোমার আত্মার জলে ভাসে তৃষ্ণার স্বাদ
তোমার ক্ষুধা মিটে যায় ধ্যানের নীরব আহারে
বুক বেয়ে বেড়ে ওঠে প্রশংসার শ্বাস
ছায়ার ভেতর যখন দুলে ওঠো ধীরে
তোমার শরীর ডুবে থাকে শীতল রঙের আঁজলায়
তোমার শ্বাসের উষ্ণতা চঞ্চল হয় নির্জন বাতাসের দেহে
হৃদয়ের গন্ধ ঢেলে দাও পৃথিবীর বুকের ওপর
তাকে মেখে নিক জগতের সমস্ত শরীর
তোমার সৌরভে পুলকিত হোক পৃথিবীর মানুষের মনের গোলাপ