ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: চীনে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের খবরে এ কথা জানানো হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, ‘এই ঘোষণার মূল করণ চীনে যা হচ্ছে তা নিয়ে নয়, বরং অন্যান্য দেশেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে তার জন্য।’
এদিকে, চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৭০ ছাড়িয়েছে। সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ৭শ’ ১১ জন। যা ২০০২-২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার চেয়েও বেশি। বৃহস্পতিবার চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানায়, ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৩৮ জন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনই হুবেই প্রদেশের। বাকি একজন সিচুয়ানের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া, হংকংসহ বিভিন্ন দেশেও এই ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিকে মহামারী ঘোষণা দেয়া হবে কি-না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আজ আবারো বসতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা। এদিকে, ভাইরাস মোকাবেলায় যার যার মতো আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। চীনের সাথে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। ভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে রোমের কাছে সাগরে আটকে রাখা হয়েছে ৬ হাজার যাত্রীসহ একটি জাহাজকে। জানা গেছে, আরোহীদের মধ্যে হংকংয়ের এক দম্পতির জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ধরা পড়ার পরই ওই জাহাজকে তীরে ভিড়তে নিষেধ করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রোস আরও বলেন, এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে চীনের নেওয়া ব্যবস্থাকে ‘অসাধারণ’ বলে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিনে মানুষে-মানুষে সংস্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেভাবে কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে তা উদ্বেগের ব্যাপার।’
এদিকে চীনের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। মহামারি আকার ধারণ করা এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১শ’ ৭০ জনে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮ হাজার। সবশেষ জাপানে উহান ফেরত তিনজন, হংকংয়ে দুইজন এবং ইউরোপের দেশ ফ্রান্স ও ফিনল্যান্ডে নতুন করে আরও একজন করে নাগরিকের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ভাইরাসটি।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, চীনের বাইরে ১৮টি দেশে করোনা ভাইরাসে ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জার্মানি, জাপান, ভিয়েতনাম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষে-মানুষে সংস্পর্শের মাধ্যমে ৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে গুয়াংজু থেকে ১০০ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে দেশে এসেছেন বাংলাদেশি এক ছাত্র। তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, করোনা ভাইরাস ইস্যুতে চীনের উহানে আটকেপড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ৩৭০ জন দেশে ফিরতে চান। আর ১৫ জন আসবেন না বলে জানিয়েছেন।
গেল বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। চীন ছাড়াও থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৮ দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়। সূত্র: এটিএন বাংলা ও সময় টিভি