আখতার-উজ-জামান : পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুর“ করে বন্ধুমহলের সাথে ছিল তার নিবিড় যোগাযোগ। জীবনের প্রত্যেক ধাপে তার ইচ্ছা ছিল কিভাবে মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যায়! সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি আর কৃষ্টি নিয়ে শৈশব থেকেই চিন্তা-চেতনায় মনোনিবেশ ছিল ঐ মেধাবী বালকটির। সহজ সরল মনটাকে সব সময় উজাড় করে দিতে চায় সব বয়সী নানা শ্রেণীর মানুষের মাঝে। আকাক্সখা ছিল বাঁচার মাঝে প্রতি¶ণে পৃথিবী জয় করার।
—-টগবগে যুবকটি বরাবরই মা-বাবা থেকে শুর“ করে পাড়া-প্রতিবেশীসহ শিক্ষাঙ্গনেও প্রথিতযশা হিসেবে সুপরিচিত। যার জন্ম হয়েছিল আজকের এই দিনে সম্ভ্রান্ত একটি মুসলিম পরিবারে।তিনি হলেন বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র-অবিরাম বাংলার মুখ -এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ডক্টর মাহফুজুর রহমান। শনিবার ছিলো সম্মানিত মানুষের পৃথিবীতে আসার-শুভ জন্মদিন। এটিএন বাংলার নিজ কার্যালয়ে সারাদিন শুভেচ্ছা জানাতে নানা বয়সী লোকজন, বিশেষ করে লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পপতিবৃন্দ, মিডিয়াঙ্গনের কলাকুশলী, চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রযোজক, পরিচালক, নায়ক-নায়িকা, টিভি অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বরা। আমি নিজেকেও একজন স্বাবলম্বি মনে করে এই মহান মানুষটির প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি উনার বার্তাকক্ষে কাজ করতে পেরে। আজ আমার এই অভিভাবক সমতুল্য প্রিয় মানুষটির জন্মদিন।
এখন চলে যাই ডক্টর মাহফুজুর রহমানের সফল স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের এটিএন বাংলার সংক্ষিপ্ত কিছু কথা।
বিশিষ্ট সমাজসেবী ডক্টর মাহফুজুর রহমানের মধ্যে প্রতিনিয়ত অভিপ্রায় জাগ্রত হতো স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে স্বাবলম্বী হবার। একদিন সত্যিই সবাইকে তাক লাগিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে কিছু অর্থ আর নিজের জমানো পয়সাকড়ি নিয়ে মেধাবী বালকটি স্বাবলম্বী হতে ঘরছাড়া হলো। চোখে তার নতুন স্বপ্ন। হ্যাঁ, স্বপ্নই একদিন সত্য হলো চিরচেনা মানুষটির জীবনে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে সফল হতে শুর“ করলো যুবকে পরিণত বালকটি। ধীরে ধীরে মানুষটি বিশ্বের মানচিত্রে নিজের ইচ্ছাশক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটালো দেশের ষোল কোটি মানুষের জীবনমান আর সংস্কৃতির বিকাশে প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি ‘এটিএন বাংলা’র মাধ্যমে। প্রাইভেট টিভি চ্যানেলটির ২৩ বছর পূর্ণ হলো। কথাগুলো না বললেই নয়, তাক লাগিয়ে দিলো দুই দশকে অবিরাম বাংলার মুখে এটিএন বাংলা। আজ এটিএন বাংলার শুভ জন্মদিন। পরিশ্রমী যুবক থেকে আজকের স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশের সাড়ে ষোল কোটি বাঙালির মধ্যে তিনি একজন সাহসি মানব-ডক্টর মাহফুজুর রহমান। যিনি শৈশব থেকে শুর“ করে এখনও পর্যন্ত নিরলশভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিটি মুহূর্তে। তাও আবার যখন পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে, ঠিক আজ থেকে ২৩ বছর আগে এই মানুষটির মনে প্রাণে জাগ্রত হলো একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করা।
বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ডক্টর মাহফুজুর রহমান ১৯৭৮ সালে তাঁর ব্যবসায়িক জীবন শুর“ করেন। বাংলাদেশ থেকে নীট পোশাক ইউরোপে রপ্তানীর মধ্যে দিয়েই তাঁর এই ব্যবসা জীবন শুর“। এরপর ‘৯৫ সালে এই ব্যবসার খাতিরেই ভারতের মুম্বাই শহরে গিয়ে জি-টিভির কার্যক্রম দেখে তাঁর ইচ্ছা হয় ওই আদলে বাংলাদেশে একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের প্রচার শুর“ করার। সেই ইচ্ছা থেকেই সেসময়ে মুম্বাই এর একটি চ্যানেল এটিএন-এর এক ঘন্টা সময় ভাড়া নিয়ে অনুষ্ঠান বানানো শুরু হয় এটিএন-বাংলার। একসময় মুম্বাইয়ে এই চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে গেলে ডক্টর মাহফুজুর রহমান চেষ্টা শুরু করেন পূর্ণাঙ্গভাবে একটি ২৪ ঘন্টার চ্যানেল শুরু করতে। থাইল্যান্ডের একটি স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে, প্রতিদিন কুরিয়ার সার্ভিসে অনুষ্ঠানের টেপ পাঠিয়ে এসময় কার্যক্রম চালায় এটিএন বাংলা। এসময়ে এটিএনএর অনুষ্ঠান এবং বিজ্ঞাপনের মান নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা ছিল; এর উত্তরে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান বলেন, অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়। অর্থাৎ সেসময় কোন বিজ্ঞাপন পাওয়া যেত না বলে বিটিভি যে সিগারেটের বিজ্ঞাপন নিত না তাই তারা লুফে নিতেন। আবার বাজেট কম থাকার কারণে তাদের অনুষ্ঠানের মানও ভাল ছিল না। সংবাদ প্রচার করার অনুমতি পাওয়ার পরপরই তার চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় বলে জানান ডক্টর মাহফুজুর রহমান।
যেখানে থাকবে শি¶াঙ্গন থেকে শুর“ করে সমাজের সর্বস্তরের সংস্কৃতি আর কৃষ্টির প্রচারণা। চিরসবুজ সেই যুবক নিজের কথা না ভেবে কঠোর পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে ২২ বছরে দাঁড় করালো এটিএন বাংলাকে। আজ আমরা যারা এই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছি, তারা সবাই বুক ভরা সাহস নিয়ে দাঁড়াতে পারি সমাজের সর্ব স্তরে। কেউ জিজ্ঞেস করলে অকপটে বলে থাকি অবিরাম বাংলার মুখ এটিএন বাংলায় কাজ করি। ঠিক তখনই অনেকে আমাদেরকে বলে আপনারা সত্যি উদারমানসিকতা আর প্রাণচঞ্চল একজন ভাল মানুষের সাথে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ডক্টর মাহফুজুর রহমান – প্রতিটি মূহুর্তে সমাজের সকল মানুষের কথা ভাবেন কিভাবে তাদের মাঝে হাসি ফুটানো যায়। সবচেয়ে বড় অর্জন তাঁর, তা হলো দেশের অবহেলিত মানুষের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার ভূমিকা। যেমন: যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে আথিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়া। আবার এদেশের অবহেলিত পথশিশুসহ প্রতিবন্ধিদের জন্য কিছু করা। যা তিনি সারা বিশ্বের বাঙ্গালীদের কাছে তুলে ধরেছেন তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের চ্যানেল এটিএন বাংলার মাধ্যমে।
সঙ্গীতশিল্পী এবং আরও নানা গুণে গুণান্বিত ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব ডক্টর মাহফুজুর রহমান এবারের বইমেলায় দেখিয়েছেন তার আরও একটি প্রতিভার ঝলক! এই বইমেলাতেই বের হয়েছে তার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘স্মৃতর আল্পনা আঁকি’! রঙতুলি ছাড়াও যে আল্পনা আঁকা যায় সেটা এই বই-এ প্রমান করেছেন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান। বইটির মাঝের অধ্যায়গুলোতে ছিলো তার প্রেম-ভালবাসা আর সুখী দাম্পত্যজীবনের আল্পনা আঁকা। দেশের প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেলটির জন্মদিনে আমাদের প্রাণভরে দোয়া যেন এটিএন বাংলা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। সেই সাথে আমরা প্রার্থনা করি এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ডক্টর মাহফুজুর রহমান, যেন সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারেন তাঁর অধিষ্ঠ লক্ষ্যে আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের কাছে আমি আমার এই চিরসবুজ প্রিয় মানুষটির নেক হায়াত ও সাফায়েত কামনা করি। আমীন।
চিরচেনা মানুষটির পৃথিবীতে আসার দিন
বিনোদন
0 Views