চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে বাসায় ডেকে এনে খুনের মামলায় এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু ও তাঁর স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহমান এ রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি মাইনুল হোসেন ভুইয়া বলেন, আদালত আসামি মো. ইকবালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড; তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড এবং ইকবালের সহযোগী মো. হেলালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন। আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন। আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২২ মার্চ নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার শহীদনগর এলাকার একটি ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. আলাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে বলা হয়, ইয়াসমিনকে পড়াতেন আলাউদ্দিন। এতে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক হয়। পরে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু দুজনের ঘনিষ্ঠ সময়ের কিছু ভিডিও চিত্র দিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল (প্রতারণা) করে আসছিলেন আলাউদ্দিন। এরই ফলে অতিষ্ঠ হয়ে ইয়াসমিন এবং তাঁর স্বামী মিলে এই হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং বাসা ভাড়া নেওয়ার নাটক সাজান। বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাঁরা শহীদনগর এলাকার একটি বাসায় যান। ইতিমধ্যে সেখানে ডেকে আনা হয় আলাউদ্দিনকে। বাসা পছন্দ হয়েছে জানিয়ে সেখানে অবস্থান করতে থাকেন তাঁরা। এরই মধ্যে আলাউদ্দিনকে খুন করে হাত–পা বেঁধে টয়লেটের মধ্যে ফেলে তাঁরা চলে যান। ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত।
১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন। ঠিক এক সপ্তাহ আগে বাসা ভাড়া নেওয়ার নাম করে একটি বাড়িতে ঢুকে পরিকল্পনা অনুসারে হত্যা করা হয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আলাউদ্দিনকে।