রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। এর আগে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও (ওসি) বদলি করা হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বদলির আদেশ জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘ইউএনও নাহিদুর রহমানকে (সিনিয়র সহকারী সচিব) বদলিপূর্বক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো উপপরিচালক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগের নিমিত্তে তার চাকরি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো। আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়। অন্যথায় ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হবেন।’
ইউএনও নাহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি কিছুদিন ধরে অন্যত্র বদলির চেষ্টা করছিলাম। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উপপরিচালক করা হয়েছে। এটি সরকারি চাকরির নিয়মিত বদলির অংশ। এর সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় জড়িত নয়।’
এর আগে গত শুক্রবার রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার কামরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। তাঁকে কার্যালয়ের অপরাধ তদন্ত শাখায় পরিদর্শক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, গোয়ালন্দ পৌরসভার জুরান মোল্লারপাড়ার বাসিন্দা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা গত ২৩ আগস্ট মারা যান। পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী ওই রাতে তাঁকে দরবার প্রাঙ্গণে কয়েক ফুট উঁচুতে দাফন করা হয়। পরে কবর নিচুতে নামানো, রং পরিবর্তন ও নাম পরিবর্তনের দাবিতে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর সমাবেশ ডাকা হয়। এ সময় একদল বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা দুটি গাড়ি ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে। নুরাল পাগলার কবরেও হামলা চালানো হয় এবং লাশ তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় অন্তত ৫০ জন আহত হন। ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাসেল মোল্লা (২৭) নামের একজন মারা যান।
ঘটনার পর ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে ও ৮ সেপ্টেম্বর নিহত রাসেলের বাবার পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। দুটি মামলায় সাড়ে সাত হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।