রাজধানী ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: গুলশানের হলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলার ৪ বছর আজ। চার বছর হয়ে গেলেও বর্বর সেই হত্যাকাণ্ড এখনো মনে দাগ কাটে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ঢুকেই জঙ্গিরা জিম্মি করে ফেলে অবস্থানরত সবাইকে। জিম্মির এ ঘটনা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। তবে ঘটনার ভয়াবহতা তখনো আঁচ করতে পারেনি কেউ। তবে প্রথম অভিযানেই যখন পুলিশের দুই কর্মকর্তা মারা যায় আর ২৫ পুলিশ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন বুঝতে বাকি ছিল না যে রাতটা কত ভয়াল হবে!
ভয়াবহ এ হামলায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ এবং প্রায় ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস জিম্মি সংকটের ঘটনা স্তম্ভিত করেছিল পুরো জাতি, পুরো বিশ্বকে।
সেদিনের জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জন নিহত হন। কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও রাতে অভিযান চালায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’ অবসান হয় জিম্মিদশার। পুলিশের অভিযানে মৃত্যু হয় হামলাকারী পাঁচ জঙ্গির।
নব্য জেএমবির নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তাদের সাংগঠনিক কোন শক্তি নেই। তবে সাইবার ওয়ার্ডে কিছু তৎপরতা রয়েছে তাদের। যা গোয়েন্দা নজরদারীর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
চার বছর আগে এই দিনে গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্যে দিয়ে নব্য জেএমবি তাদের শক্তি সামথ্যের জানান দেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিদেশেী নাগরিকদের হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করা। ঘটনার রাতে সশস্ত্র ৫ জঙ্গি রেস্তোরায় থাকা দেশী-বিদেশী নাগরিকদের প্রথমে জিম্মি করে ফেলে। জিম্মি উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে তুমুল সংঘর্ষে মারা যায় পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
আলোচিত এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে। এরই মধ্যে তদন্ত শেষ করে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে গোয়েন্দারা । এখন চলছে বিচার কাজ। গোয়েন্দা তদন্তে উঠে আসে হলি আর্টিজান হামলা ও পরিকল্পনার সাথে জড়িত ছিলো ২১ জন। এর মধ্যে মাস্টার মাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ ১৩ জন বিভিন্ন সময় র্যাব ও পুলিশের অভিযানে মারা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে দুর্বল হয়ে পড়ে এই সংগঠনটি।
হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম প্রধান মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা মারা যাওয়ায় এখন অনেকটাই নেতৃত্বশূন্য নব্য জেএমবি নামের সংগঠনটি। বড় ধরনের কোন হামলার শক্তি তাদের নেই মনে করেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। হলি আর্টিজান মামলার ৭ জঙ্গির ফাসির রায়ের মধ্যে দিয়ে নব্য জেএমবির তৎপরতা শেষ হয়েছে বলে মনে করেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
এদিকে এ হামলার পর বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল এ হামলার সাথে আর্ন্তজাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর যোগসুত্র রয়েছে। যদিও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, আইএসের কোন অস্তিত্ব নেই। সূত্র : এটিএন বাংলা ও চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর
গুলশানের হলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলার ৪ বছর আজ। চার বছর হয়ে গেলেও বর্বর সেই হত্যাকাণ্ড এখনো মনে দাগ কাটে
অপরাধ জগত
0 Views