রোববার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে সোমবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে শেষ মুহুর্তে বাড়ি ফিরছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। গাজীপুরের যানজট প্রবণ বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক রোববার দুপুরের আগেই অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে।
রোববার (৩০ মার্চ ) সকাল ১১টার পর থেকে গাজীপুরের ঢাকা—ময়মনসিংহ ও ঢাকা—টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রায় যানবাহনশূন্য হয়ে পড়েছে। এরআগে এসব মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ থাকলেও যানজট ছিল না। তখন চন্দ্রা ও গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছিল।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের এডিসি (ট্রাফিক) অশোক কুমার পাল জানান, গাজীপুরের সকল কলকারখানা শনিবার বিকেলের মধ্যে ছুটি হয়ে গেছে। তবে এবার কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে একসঙ্গে চাপ কম পড়েছে। এছাড়াও অধিকাংশ কারখানা ১০ দিন ছুটি হওয়ায় শ্রমিকরা ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরেছেন। রোববার সকালে শেষ মুহূর্তে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মানুষ ও যানবাহনের কিছু চাপ সৃষ্টি হলেও দুপুরের আগেই তা কমে যায়। যানজট প্রবণ এ এলাকায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে ঢাকামুখী লেনে উত্তরবঙ্গগামী ও ঢাকাগামী যানবাহনগুলো রেশনিং পদ্ধতিতে চালু রেখে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ মুক্ত করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শনিবার রাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয়। এতে মধ্যরাতে ঢাকা—ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড, কলেজগেট, চেরাগআলী, বোর্ডবাজার, চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের ব্যপক চাপ দেখা যায়। যা রোববার সকালেও ছিল। অপরদিকে শনিবার রাতে ঢাকা—টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর বাজার থেকে চন্দ্রা হয়ে টাঙ্গাইলের গোড়াই পর্যন্ত ও নবীনগর—চন্দ্রা রোডের চক্রবর্তী পর্যন্ত যানবাহনে চাপ ছিল। দীর্ঘসময় চন্দ্রা এলাকায় যানজটের কবলে পড়েন যাত্রীরা। তবে সেহরির পর থেকে মহাসড়ক ফাঁকা হয়ে গেছে।
স্থানীয় ভোগড়া বাইপাস কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, মুহূর্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মুদি দোকানদার, রিকশাচালকরা বাড়ি ফিরছেন। মূলত গাজীপুরের অধিকাংশ ব্যবসা গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের ঘিরে। শ্রমিকরা শনিবার রাতেই বাড়ি চলে যাওয়ার রোববার সকাল হতে এসকল ব্যবসায়ী ও রিকশা চালকরা বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন। এসময় মহাসড়কে মানুষের সাময়িক চাপ সৃষ্টি হলেও সকালে ১১ টার পর তা কমে গেছে। তিনি নিজেই রোববার দুপুরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে তিনি নির্বিঘ্নে গাড়িতে উঠেছেন। এখন রাস্তায় যানবাহনের কোন চাপ নেই, তেমন যাত্রীও নেই।
এবার বিগত বছরের ঈদ যাত্রার মতো চিরচেনা দীর্ঘ যানজট ও ভোগান্তি ছিল না। ঈদে ঘরমুখো মানুষ সাচ্ছন্দ্যে গ্রামের বাড়িতে যেতে পেরেছে। সাধারণত শিল্প কারখানা ছুটি হলে ঈদের আগে ঘরমুখ মানুষের চাপে গাজীপুরের দুই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। তাদের ১ ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে ৫ ঘণ্টা লেগে যেতো। তবে এবারের চিত্রটা পুরোপুরি বিপরীত। শেষ মুহূর্তের ঈদের যাত্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা পেয়েছেন শহরে বসবাসরত কর্মজীবী মানুষেরা।
নাওজোর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে মহাসড়কে বেশ চাপ ছিল তবে মধ্যরাতের পর থেকেই স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সকালের দিকে মহাসড়কে কিছুটা চাপ সৃষ্টি হলেও কোথাও যানজট ছিল না।