গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অবরোধ ও খাদ্যঘাটতির কারণে এক নবজাতক এবং চার বছর বয়সী এক শিশু অনাহারে মারা গেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আল-শিফা হাসপাতাল জানিয়েছে, মাত্র ৩৫ দিনের এক নবজাতক ম্যালনিউট্রিশনের কারণে মারা গেছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, ওই শিশুটি রাতে অনাহারে মারা যায়। একই রাতে আরও একজন অনাহারে মারা যান বলে জানান তিনি।
এদিকে, আল-আকসা মার্টির্স হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, চার বছর বয়সী রাযান আবু জাহের চরম অপুষ্টির জটিলতায় মারা যায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগগুলো এখন উপচে পড়া রোগীতে ভরে গেছে এবং সেখানে ‘অত্যন্ত বেশি সংখ্যক’ অনাহারী রোগী আসছে। মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় বর্তমানে প্রায় ১৭,০০০ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা এখনও আমেরিকা-সমর্থিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। অনেকেই এসব সহায়তা কেন্দ্রকে এখন ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।
এদিকে, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতির বাসিন্দারা একটি গুরুত্বপূর্ণ পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় হামলা চালিয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। হামলার ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির জন্য পানির সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এন সামিয়াহ ঝরনা এলাকার পানির সরবরাহ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণকারী পানির অপারেটর সুবহিল ওলায়ান জানান, বসতির লোকেরা পাইপলাইন ভেঙে ফেলে, যার ফলে পাম্পিং বন্ধ রাখতে বাধ্য হন তাঁরা। তিনি বলেন, “পাইপলাইন ভেঙে গেলে পানি মাটির নিচে চলে যায়।” তবে দ্রুত মেরামত কাজ শুরু করে পুনরায় পানি সরবরাহ চালু করা হয় বলে জানান তিনি।
এই পানির সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষকে পানি সরবরাহ করে। পশ্চিম তীরে পানির সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা, ফলে এমন হামলার প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
এছাড়া, আজ শনিবার গাজা শহর এবং উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানে অন্তত ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং একাধিক বেসামরিক ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা ও স্থানীয় সূত্রগুলো।
নিহতদের মৃত্যু ঘটনা ভোররাতে সংঘটিত হয় বলে জানানো হয়, যদিও বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।