গত ১৬ বছরে জামায়াতের উপর আওয়ামী লীগ সরকার যে নির্যাতন করেছে তা দল হিসেবে ক্ষমা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
কারও প্রতি কোনো প্রতিশোধ নেয়া হবে না আশ্বস্ত করে জামায়াতের আমির বলেছেন, ‘যদি ভিকটিম হিসেবে কেউ যদি বিচার প্রত্যাশী হয় তবে তাকে স্বচ্ছ আইনী প্রক্রিয়া নিশ্চিতে সহায়তা করবেন তারা। ’
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয় সরণির একটি রেস্টুরেন্টে মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত দলটির আমিরের সঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াত আমির বলেন, আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। তাই জাতীয় স্বার্থেই আমাদেরকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে পুরো বিশ্বই আমাদেরকে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে। আর দেশের সকল নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হলে গণমাধ্যমকর্মীসহ রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উদ্দেশ্য হবে গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণ। নিকট অতীতে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের কলমকে রুদ্ধ করা হয়েছিল। সাময়িকভাবে হলেও সে তালা এখন খুলেছে। এ বিজয় ধরে রাখার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বীজতলা সুন্দর হলে তা মহীরূহে পরিণত হবে এবং তা এক সময় ছায়া ও ফল দেবে। তিনি অর্জিত বিজয়কে পরিচর্যা করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের ওপর যারা জুলুম-নির্যাতন করেছে আমরা তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমরা সংশোধন ও ক্ষমার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তবে কোনো ভিকটিম বা ভিকটিমের পরিবার যদি আইনে আশ্রয় নেয়, তাহলে আমরা তাদেরকেও সহযোগিতা করব। দল হিসেবে আমরা কোনো প্রতিশোধ নেব না। আমরা আদর্শ ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাসী। আর আদর্শ ডেমোক্রেসির মূলমন্ত্রই হচ্ছে যার যার মতো স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার এবং পরমতের প্রতি সহনশীলতা।
তিনি মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যম কর্মীদের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সকল পর্যায়ে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা। তাদের শ্লোগানই ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আমাদের দেশে গণমাধ্যমকর্মীরাও জাস্টিস থেকে বঞ্চিত। তারা স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ওয়েজ বোর্ড দেয় না। ফলে তাদের পরিবার-পরিজন সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। এখন সময় এসেছে এসব বৈষম্যের অবসান ঘটানো। জামায়াত সব সময় সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকবে। তিনি দেশ ও জাতির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সকল প্রকার ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।