এখনও তিন মাস হয়নি, নিজেদের আঙিনায় রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ধরাশায়ী হয়েছিল বার্সেলোনা। আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে স্পেনের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল। জেরার্দ পিকের মতে, এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। মাদ্রিদের দলটিকে সমীহ করলেও তাদের একরকম হুমকিই দিলেন কাতালান দলটির এই ডিফেন্ডার
স্প্যানিশ সুপার কাপের এক লেগের সেমি-ফাইনালে বুধবার রিয়ালের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। সৌদি আরবের রিয়াদে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুই দলের চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোয়৷ অভিজ্ঞ লুকা মদ্রিচ, টনি ক্রুস ও কাসেমিরো ও করিম বেনজেমাদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তরুণ ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র।
অন্যদিকে, মৌসুমের শুরুতে লিওনেল মেসিসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হারানো বার্সেলোনাকে ধুঁকতে হচ্ছে মাঠের পারফরম্যান্সেও। লা লিগায় তারা আছে ছয় নম্বরে, রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান ১৭ পয়েন্টের। ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে তো ছিটকে যেতে হয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই।
আরেকটি ক্লাসিকো সামনে রেখে সোমবার মুভিস্টারের সঙ্গে আলাপচারিতায় রিয়ালের প্রশংসা করেন পিকে। তার মতে, অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের দারুণ মেলবন্ধনই দলটিকে এগিয়ে রাখছে। তবে
রিয়াল মাদ্রিদ সেই ভিত্তি ধরে রেখেছে যা তাদের অতীতে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। কাসেমিরো, (টনি) ক্রুস ও (লুকা) মদ্রিচের সমন্বয়ে গড়া তাদের মিডফিল্ড, যারা একে অপরকে খুব ভালভাবে চেনে এবং বছরের পর বছর ধরে তারা যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে তা খুবই উঁচুমানের। (করিম) বেনজেমা ও ভিনিসিউস জুনিয়র গোল করা এবং তাদের খেলার দিক থেকে খুবই উঁচু পর্যায়ে রয়েছে।”
“তাদের এমন একটি দল রয়েছে যারা রক্ষণে ভালো, যারা বল ছাড়াও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে এবং ভিনিসিউস ও মিডফিল্ডারদের মধ্যে পজিশন বদলানোর মধ্যে দিয়ে আক্রমণে ওঠে তারা এবং নিশ্চিত করে যেন বেনজেমা বল পায়… বছরের পর বছর ধরে এভাবেই খেলছে তারা। আমরা তাদের ভালো করে জানি। তারা উঁচু স্তরে আছে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমরা তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি।”
কাম্প নউয়ে গত ২৪ অক্টোবর লা লিগায় রিয়ালের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় বার্সেলোনা। একমাত্র গোলটি তারা করতে পারে শেষ সময়ে। এর কিছুদিন পর বরখাস্ত হন তখনকার কোচ রোনাল্ড কুমান। তার জায়গায় দায়িত্ব পান ক্লাবের সাবেক মিডফিল্ডার শাভি এরনান্দেস।
পিকে মনে করেন, ওই ম্যাচে পরাজয় তাদের প্রাপ্য ছিল না। ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারের মতে, এই কয়েক মাসে চিত্র বদলে গেছে।
“তাদের (রিয়াল) তিন পয়েন্ট পাওয়াটা অন্যায্য ছিল।”
“আমার মনে আছে সের্জিনো দেস্তের একটি ভুল এবং প্রথমবার আক্রমণে গিয়েই তারা এগিয়ে গিয়েছিল। এতে আমরা আরও প্রভাবিত হয়েছিলাম, কিন্তু (এখন) পরিস্থিতি বদলে গেছে।”
লিগের সেই হারের তেতো স্বাদ ভুলে স্প্যানিশ সুপার কাপে রিয়ালের বিপক্ষে সমানে সমান লড়ার প্রত্যয় পিকের কন্ঠে। তিনি আশাবাদী, নিজেদের শতভাগ উজাড় করে দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেবেন তারা।
“এটিও একটি প্রতিযোগিতা এবং আমরা সবাই এর জন্য একইভাবে লড়াই করব, যেমনটা আমরা অতীতে দেখিয়েছি। শিরোপা জেতার জন্য আমাদের বিশাল অনুপ্রেরণা রয়েছে। এটি সেমি-ফাইনাল, এল ক্লাসিকো, এবং এটা কঠিন হবে।”
“তবে আমরা বিশ্বাস করি, (এই ম্যাচটিতে) আমরা একটি ভালো মুহূর্তে এসেছি। আমরা উন্নতি করছি। আশা করি, আমরা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে, জয় পেতে এবং ফাইনালে পৌঁছাতে পারব।”