কোপা আমেরিকার শিরোপা জিততে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এবার লড়বে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে। মেসি’র সামনে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের হাতছানি। অন্যদিকে, ২৩ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো কোপার শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সুযোগ কলম্বিয়ার। লাতিন আমেরিকার শক্তিশালী এ দুই দল মহারণ দেখার অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব। সোমবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কোপার ফাইনালে মুখোমুখি হবে তারা।
শক্তির বিচারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এগিয়ে থাকলেও সমসাময়িক পারফরম্যান্সে কলম্বিয়া কিন্তু মোটেও পিছিয়ে নেই। আর্জেন্টিনার মতো চলমান কোপায় তারাও অপরাজিত। ২৮ ম্যাচ কলম্বিয়ানদের হারাতে পারেনি কেউ। সবশেষ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পর আর হারেনি হামেস রদ্রিগেজের দল। অন্যদিকে, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ১০ ম্যাচে অপরাজিত। সবশেষ ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে উরুগুয়ের কাছে হেরেছিল মেসিরা।
অবশ্য দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা যোজন যোজন দূর এগিয়ে আছে। কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা মোট ৪৩বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে আর্জেন্টিনা জিতেছে ২৬ ম্যাচে ও কলম্বিয়ার জয় নয় ম্যাচে। বাকি আটটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার প্রথম সাক্ষাৎ হয় ১৯৪৫ সালে, তাও আবার কোপা আমেরিকার মঞ্চে। যদিও ওই সময় টুর্নামেন্টটির নাম ছিল ‘দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ’। ওই আসরে একই গ্রুপে খেলে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া। চিলির সান্তিয়াগোতে নাসিওনাল জুলিও মার্টিনেজ প্রদানোস স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে ম্যাচটিতে লম্বিয়াকে ৯-১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। যা ছিল দলটির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয়।
ওই আসরেই ব্রাজিলকে হারিয়ে সপ্তমবারের মতো কোপার শিরোপা ঘরে তুলে আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৭ গোল করে আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। ম্যাচের ৩ ও ৭ মিনিটে রেনে আলেজান্দ্রো পন্টোনি প্রথম দুইটি গোল করেন। ১৫ মিনিটে নরবার্তো ডোরোতেও মেন্ডেজ করেন তৃতীয় গোলটি। এর ৬ মিনিট পর ২১তম মিনিটে জুয়ান জোসে ফেরারো পা থেকে আসে চতুর্থ গোল। ২৭ মিনিটে রিনালদো ফিওরামন্টি মার্টিনো করেন পঞ্চম গোলটি।
৩৯তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন নরবার্তো ডোরোতেও মেন্ডেজ। এরপর বিরতির আগে (৪১ মি.) ও পরে (৫০ মি.) জোড়া গোলের দেখা পান মারিও হেরিবার্তো বয়ে। যা ছিল আর্জেন্টিনার সপ্তম ও অষ্টম গোল।
ম্যাচের ৫২ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করার সুযোগ পায় কলম্বিয়া। দলটির হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আর্তুরো মেন্ডোজা। ৮০ মিনিটের মাথায় জুয়ান হোসে ফেরারো ম্যাচের শেষ ও আর্জেন্টিনার নবম গোলটি করেন।
এরপর দুই দলের সাক্ষাৎ হয় ১৯৪৭ সালের কোপা আমেরিকায়। সেবারে আর্জেন্টিনা কলম্বিয়াকে হারায় ৬-০ গোলে। দুই দলের তৃতীয় সাক্ষাৎ হয় প্রায় ১০ বছর পর ১৯৫৭ সালের কোপা আমেরিকায়। ওই আসরেও রেকর্ড ৮-২ গোলে কলম্বিয়াকে হারায় আলবিসেলেস্তেরা।
আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার প্রথম ১০ সাক্ষাতে নয়টির মোট স্কোর ছিল ৪০-৯ গোলের ব্যবধান। আলবিসেলেস্তেদের বিপক্ষে কলম্বিয়ানদের প্রথম জয়টি আসে ১৯৮৪ সালের আগস্টে ১-০ ব্যবধানে। ১৯৯৪ এর বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে মুখোমুখি হয় দল দুইটি। আশ্চর্যজনকভাবে ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনা হারে ৫-০ গোলে। যা আর্জেন্টিনার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় পরাজয়।
সূত্র: স্পোর্টস মোলি