এক অদৃশ্য সুরে বাঁধা বাঙালির হৃদয়ে প্রকৃতি। ষড়ঋতুর লীলাভূমিতে ঝড়-বৃষ্টির দামামা বাজিয়ে, ধূলাবালির মেঘ উড়িয়ে, বজ্রের গর্জনে কাঁপিয়ে বৈশাখ আসে এক নবজাগরণের প্রতীক হয়ে। এ বছর পহেলা বৈশাখ আসছে এক নতুন ভোরের বার্তা নিয়ে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিজয়ের আবহেই আসছে এবারের পহেলা বৈশাখ।
বাংলার প্রকৃতিতে বাজছে বৈশাখের আগমনী বার্তা। গাছের পাতার ফাঁক গলে প্রখর রোদ জানান দিচ্ছে প্রকৃতি নিজেই খুলে দিয়েছে বৈশাখের দুয়ার। বৈশাখের প্রতীক কৃষ্ণচূড়ার ডালেও লেগেছে আগুন, যেন বলছে—আসছে উৎসব, আসছে রঙ, আসছে বৈশাখ।
বৈশাখে কেবল প্রকৃতিই নয়, জেগে ওঠে বাঙালির হৃদয়। তাইতো রোদের দাবদাহ পিছু হটায় না বাংলার মা মাটির মানুষ কৃষককেও। যাদের জন্যে শুরু হয়েছিল নববর্ষের ধারা, তাদেরও বুকে জাগায় আশা-ভরসার আলো।
বাঙালির জীবনচক্রে প্রকৃতির মেজাজি সন্তান বৈশাখ যেন অনিবার্য। তাইতো এবারের পহেলা বৈশাখও আসছে ভিন্ন রূপে। এ বৈশাখ শুধু ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে নতুন বছর শুরু করার নয়, এ একটি নতুন সময়ের সূচনা। স্বৈরশাসকের পতনের পর তারই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নতুন বছরে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে একটি আলোকিত ভবিষ্যতের।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিজয়ের আবহেই আসছে এবারের পহেলা বৈশাখ। চারদিকে উৎসবের রঙ, মুখে মুখে শুভেচ্ছা, কিন্তু এর মাঝে রয়েছে এক আশার বার্তা। সে বার্তা বদলে যাওয়ার, নতুন দেশ গড়ে তোলার।
শিল্পীরা বলছেন, গতবছর দেশে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সেই পরিবর্তনের সামগ্রিকভাবে উদযাপন এই পহেলা বৈশাখ হতে যাচ্ছে। এমন দিনে প্রত্যাশা, বাংলাদেশটা যেন ভালো থাকে। দলমত নির্বিশেষে এটা আমাদের সংস্কৃতি। এটাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে।
নতুন বছরের প্রতিটি দিন হোক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জ্বল। সবার আশা এই বৈশাখ হোক প্রতিজ্ঞার, এই বৈশাখ হোক নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তিপ্রস্তর।