জানা অজানা ডেস্ক, আজনিউজ২৪: প্রতি বছর দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রোগের প্রধান কারণ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। ১০ বছর পূর্বে ডায়াবেটিসের হার ছিল ৫-৬ ভাগ; বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১১-১২ ভাগ। উচ্চ রক্তচাপের হার ছিল ১০ ভাগ; এখন বেড়ে হয়েছে ২০-২৫ ভাগ। কিডনি রোগীর হার ১৬-১৭ ভাগ থেকে বেড়ে এখন হয়েছে ২০ ভাগ।
সমস্যা হলো, ৫০-৬০ ভাগ মানুষ জানেনই না যে তাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। ফলে তারা কখনো ডাক্তারের শরণাপন্ন হন না। যখন তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন দেখা যায়, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির কার্যকারিতা ৭০-৮০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। কিডনি অকেজো হয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর মারা যায় ৪০ হাজার রোগী। আমাদের সীমাবদ্ধতা হলো দেশে ২০ ভাগ রোগীর চিকিৎসার সুযোগ থাকলেও বাকী ৮০ ভাগ রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যায়।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষ্যে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক এএসএম মতিউর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এনবিআর এর সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মুহিবুর রহমানসহ অন্যান্য কিডনি ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞরা। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিচার্স ইনস্টিটিউটে কিডনি অকেজো রোগীদের খুব কম খরচে চিকিৎসা প্রদানের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।
মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক এএসএম মতিউর রহমান বলেন, মানুষের মধ্যে যদি কিডনি রোগ সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করা যায় তবে এই রোগ অনেকাংশে কমে যাবে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমাদের মতো স্বল্পউন্নত দেশে প্রতি বছর ৪০ হাজার রোগীর ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন করা সম্ভব না। সুতরাং প্রতিরোধই কিডনি রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।
কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে হার্টের সমস্যাও বাড়ে। কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক থাকলে ২ ভাগ মানুষ হার্টের জটিলতায় ভোগে, কিন্তু কিডনি রোগের কার্যকারিতা ৮০ ভাগ কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় ৪০ ভাগ।
তিনি আরো বলেন, যাদের বয়স ৪০ বছরের ওপরে, যাদের পরিবারে কিডনি, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী আছে, যারা ধুমপান করে, যাদের শরীর মুটিয়ে যাচ্ছে, যারা অলসতায় দিন কাটায় তাদের সবাইকে বছরে অন্তত ২ বার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ মাপাসহ প্রস্রাবে প্রোটিন নির্গত হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন খাবারে লবণ কম খাওয়া, চিনি বর্জন করা, ফাস্টফুড পরিহার করা, কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম করতে হবে।