যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে গুলিতে নিহত চার্লি ক্লার্কের সন্দেহভাজন খুনির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা যায়, কার্ককে গুলি করার পরপরই সন্দেহভাজন ব্যক্তি ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ছেন। এরপর তাঁকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া গতকাল কার্ককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, ঘটনাস্থলে একটি রাইফেল পাওয়া গেছে। সেটি কার্ক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাইফেল ও গুলিতে রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা ছিল।
কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে কার্ককে নিশানা করে গুলি চালান। যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্রের অধিকারের কট্টর সমর্থক কার্ক যখন গণহারে গুলি চালানোর বিষয়ে দর্শকদের একটি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন গুলিটি তাঁর ঘাড়ে এসে লাগে। এ সময় আতঙ্কে দর্শকেরা দৌড়ে পালিয়ে যান।
ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তাদের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনের যে ছাদ থেকে কার্ককে নিশানা করে গুলি চালানো হয়েছিল, সেখান থেকে এক ব্যক্তি নিচে নামছেন।
ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটি কমিশনার বো মেসন বলেন, ওই ব্যক্তি ছাদ বেয়ে ভবন থেকে নিচে নামার সময় সেখানে তাঁর হাতের ছাপ ও অন্যান্য ডিএনএ নমুনা রেখে গেছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, লোকটি রাস্তা পার হয়ে ক্যাম্পাসের কাছে একটি জঙ্গলে ঢুকছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখান থেকেই তারা একটি ‘উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোল্ট অ্যাকশন’ রাইফেল উদ্ধার করেছে।
ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তাদের প্রকাশ করা দ্বিতীয় দফার ছবিগুলো কিছুটা পরিষ্কার। এতে ওই পাতলা গড়নের তরুণের ব্যাকপ্যাক ও পায়ে কনভার্স জুতা দেখা যায়। হত্যাকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিতে পারলে তথ্যদাতাকে এফবিআই এক লাখ ডলার পুরস্কার দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তারা নিরাপত্তা ক্যামেরার অস্পষ্ট কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে ‘সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে’ দেখা যাচ্ছে। তাঁর গায়ে ছিল কালো রঙের পুরো হাতার গেঞ্জি, চোখে কালো সানগ্লাস ও মাথায় ছিল গাঢ় রঙের বেসবল ক্যাপ। গেঞ্জির ওপর মার্কিন পতাকার সামনে একটি ঈগলের ছবি আঁকা ছিল।
এক বিশেষজ্ঞের মতে, চার্লি কার্ক যে মঞ্চে কথা বলছিলেন, তার কাছের অডিও শুনে মনে হচ্ছে, শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন (সুপারসনিক) একটিমাত্র গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী ৩১ বছর বয়সী চার্লি কার্কের হত্যাকারীকে ধরতে এখনো অভিযান চলছে। কার্ক একজন লেখক, পডকাস্ট হোস্ট ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তিনি তরুণ ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকান দলের সমর্থন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছিলেন। ট্রাম্প এটিকে ‘জঘন্য হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছেন। কার্ককে কেন হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তকারীরা এখনো প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, হত্যাকারীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের এ বিষয়ে পরে জানাব।’ এফবিআই ও অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা বলছেন, অনুষ্ঠান শুরুর কয়েক মিনিট আগে হত্যাকারী ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন। ‘প্রুভ মি রং’ (আমাকে ভুল প্রমাণ করো) শিরোনামে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে। এতে প্রায় তিন হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।