গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর রোমে প্রায় ৩৯ লাখ টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ ও উই পোকা খেয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিন জানাগেছে, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুুনুর রশিদের অব্যবস্থাপনায় রোগীদের জন্য সরকারি বরাদ্দের ঔষধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম তালাবদ্ধ স্টোর রোমে ২০২৩ সালেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় এবং বেশির ভাগ ঔষধই উইপোকা খেয়ে ফেলেছে। এতে প্রায় ৩৯ লাখ টাকার ঔষধ নষ্ট হয়েছে বলে আনুমানিক ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন নিম্নবিত্ত রোগীরা। পর্যন্ত ঔষধ থাকা সত্ত্বেও বাহির থেকে ঔষধ কিনে আনতে হয় বলে জানিয়েছেন একাধিক রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, স্টোর রোমটি দীর্ঘদিন যাবত খোলা হয় না। সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশিদের আমল থেকে এই স্টোর রোমটি তালা বন্ধ অবস্থায় ছিলো। রোগীদের চাহিদা মুতাবেক প্রয়োজনীয় ঔষধ না দিয়ে স্টোর রোমে মজুত করা হতো। হাসপাতালে সরকারি পর্যাপ্ত ঔষধ থাকলেও রোগীদের বাহির থেকে ঔষধ কিনে আনতে হয়েছে।
স্টোর কিপার আজহারুল হক জানান, অনেক ঔষধ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর এবং ২৪ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। আমার আগের স্টোর কিপার আমাকে সঠিক ভাবে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে যায় নাই। আমি যেটুক পেয়েছি সেখান থেকে শুরু করেছি। আর এই স্টোর রোমে তালা দেওয়া ছিলো, নতুন দায়িত্ব হিসেবে আমি একা তালা ভাঙতে পারি না স্যারদের ছাড়া। স্যারদেরকে নিয়ে ভাঙতে হবে, তারা ভাঙ্গেনি, সেজন্য আমি একা ভাঙ্গিনি।
সাবেক স্টোর কিপারের নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরের হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বর্তমান গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা: মামুনুর রশিদ তৎকালীন স্টোরকিপারের আব্দুর রাজ্জাকের উপর সকল দায় চাপিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন। তিনি স্টোর কিপার রাজ্জাকে একাধিকবার বলার পরেও নাকি তার কথা শুনতেন না বলে দায়মুক্ত করার চেষ্টা করেন এই কর্মকর্তা।
এব্যাপারে আজ নিউজকে বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: হাবিবুর রহমান জানান, আমি গত ১৩ই মার্চ এখানে জয়েন করেছি। এখানে এসেই সকল ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলেছি এবং সকলকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। সবাই যেন সরকারি বিধি মোতাবেক চলেন এবং সবার দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন করে। যে ওষুধ গুলো ২০২৪ সালের দিকে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ওই গুলো সম্পর্কে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা বলতে পারবেন, আমি যেহেতু ছিলাম না তাই আমি বলতে পারব না। তবে আমি আপনাদেরকে বলতে পারি এখন থেকে এরকম কিছু আর হবে না। আর ভবিষ্যতে যাতে সকল ওষুধ সঠিক ভাবে ব্যবহার হয় বা সব লজিস্ট্রিক্ট সকল রোগীরা পাওয়ার সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।