
ঘড়ির কাটায় বেলা সাড়ে এগারোটা। স্বাভাবিক দিনে এই সময়ে স্কুল শেষে বাসায় ফেরার কথা রাজধানীর ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফসা রহমানের। অথচ এখনো বিছানা ছাড়তেই গড়িমসি।
স্কুল বন্ধ থাকলেও নিয়মিত পড়ার টেবিলে বসা হয় ঠিকই। কিন্তু লেখাপড়ার আগের আনন্দটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
শিশু শিক্ষার্থী হাফসা রহমান জানান, স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে ওখানে আমার স্যার-ম্যাডাম ও আমার বান্ধীরা রয়েছে। তাদেরকে আমি খুবই মিস করি।
মশিউর দম্পতির বড় সন্তান তালহা রহমান। দীর্ঘ সাত মাসের বন্দি দশায় স্কুলের দুয়ার না খুললেও ক্লাস-পরীক্ষা হয় অনলাইনে। তবে প্রযুক্তি পণ্যে ক্লাস-পরীক্ষার থেকে বিনোদনেই যেন বেশি টান তালহার। দিনের বেশিরভাগ সময় পড়ারে টেবিলে থাকলেও পড়া হয় না ঠিক আগের মতো।
তালহা বলেন, প্রথম কয়েকদিন আনন্দে ছিলাম। এখন আর ভালো লাগছে না। খুবই অস্বস্তিকর।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৩টি উন্নয়নশীল দেশে চালানো আন্তর্জাতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, করোনায় ৯১ শতাংশ শিশু কিশোর মানসিক চাপ ও শঙ্কায় মধ্যে রয়েছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ের থেকেও অনেক বেশি সময় দিয়েও কিছুতেই যেন কাটছে না শিশুর একাকীত্ব। যা অভিভাবকদেরও ফেলেছে গভীর চিন্তায়।
হাফসার বাবা বলেন, বাসায় থাকতে তার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ যাচ্ছে। কোন কিছুই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে চায় না।
শিশুকে মানসিক জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে রুটিন লাইফের অভ্যাস ধরে রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মোহিত কামাল বলেন, যেহেতু শিক্ষার্থীরা স্কুলকে মিস করছে। সেজন্য একটা ডামি স্কুলও ঘরে তৈরি করা হোক। সেখানে আগে যেভাবে ৭টায় স্কুলে যাওয়ার জন্য ড্রেস পরে রেডি হয়; সেভাবেও বাসায়ও তৈরি হবে, ব্যাগটা কাঁদে নিয়ে পড়ার টেবিলে বসবে। এতে তার ভিতরে যে হতাশা আছে, সেটা দূর হবে।
ঘরবন্দি সময়ের একঘেয়েমি কাটাতে শিশুকে স্বজন-বন্ধু ও শিক্ষকদের সাথে অনলাইন যোগাযোগ স্থাপনেরও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে সতর্ক থাকতে হবে, অতিমাত্রায় প্রযুক্তির ব্যবহার যেন রূপ না নেয় আসক্তিতে। সূত্র : সময় টিভি