যে ওয়ানডে এক সময় ছিল টাইগার ক্রিকেটে বড় গর্বের জায়গা, সেখানেই হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ২২১ রানে অলআউট হয়ে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয়টিতে আরও বড় লজ্জা। ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২৮.৩ ওভারে ১০৯ রানে গুটিয়ে গিয়ে হার ৮১ রানে। আবুধাবির এই মাঠে কম রান তাড়ায় সবচেয়ে বড় হারের রেকর্ড এটি। আফগানদের বিপক্ষেও বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ইনিংস ও সবচেয়ে কম ওভারে অলআউট এটিই। একসময় যে সংস্করণ ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তির জায়গা, সেটিই এখন নিয়মিত হতাশার উপলক্ষ। সবশেষ ১১ওয়ানডের ১০টি হারল তারা। সিরিজ হারের তেতো স্বাদ পেতে হলো টানা চার সিরিজে। আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারতে হলো এই নিয়ে টানা তিনটি। সর্বোপরি নিজেদের শেষ সাত সিরিজে ষষ্ঠ হার এটি। র্যাঙ্কিংয়ের দশ নম্বর জায়গাটাও নড়বড়ে। সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ স্বীকার করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে হারিয়ে যেতে হবে! ব্যাটিংয়ে স্কিল আর মানসিকতা দুই ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখছেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ পাকিস্তান গ্রেট মুশতাক আহমেদ। ‘আমাদের এই রান তাড়া করে সহজে জেতা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা জঘন্য ব্যাটিং করেছি। সতীর্থদের বলেছিলাম টপ অর্ডারে জুটি দরকার। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। আমরা জুটি গড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু দায়িত্ব তো নিতে হবে। সমস্যা সেখানেই। বোলিংটা ভালোই হচ্ছে কিন্তু আমাদের ব্যাটাররা যথেষ্ট দায়িত্ব নিচ্ছে না। সত্যি বলতে, ব্যাটিংয়ে উন্নতি দরকার। যদি ওয়ানডেতে রান করতে না পারি, এভাবে চলতে থাকে, তাহলে আমরা টিকে থাকতে পারব না!’ বলছিলেন মিরাজ। ২২.২ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৯ রান ছিল বাংলাদেশের স্কোর। হাতে যখন ৫ উইকেট আর শেষ ১৬৬ বলে ৯২ রান দরকার, তখন ম্যাচের পাল্লা তো মিরাজের দলের দিকেই ভারি। উইকেট যতই কঠিন হোক, যত উইকেটই পড়ুক, ওভারপ্রতি ৩.৩৩ রানরেটে বাকি পথ পাড়ি দেওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু সে সময়ই নামে ভয়াবহ ধস। ১০ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে শেষ মিরাজের দল। এমন ব্যাটিং ব্যর্থতা একেবারে নতুন নয়। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ খেলেছে ২৯৩ বল। যার মধ্যে ১৬৯ বলই খেলেছে ডট। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সর্বসাকূল্যে খেলেছে ১৭১ বল। সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিকরা নিজেদের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন। স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ বলেন,‘স্কিল ও মানসিক দুই জায়গাতেই সমস্যা আমাদের ক্রিকেটারদের। প্রচুর চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু মানসিক বাধা কাজ করছে। বোলারকে না খেলে বল খেলতে হবে। ভালো বলে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক রোটেট করলে বোলার চাপে পড়ে।’
প্রথম দুই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ২০ উইকেটের মধ্যে ৮ উইকেটই তুলে নিয়েছেন রশিদ খান। যার মধ্যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৮.৩ ওভার বোলিং করে খরচ করেন ১৭ রান। দিয়েছেন দুই ওভার মেডেন। খেলোয়াড়ি জীবনে লেগস্পিনার হওয়ায় আরেক লেগস্পিনার রশিদ খানের বোলিংয়ের ধরন ভালোই বুঝতে পারেন মুশতাক,‘আমি যেটা বুঝতে পারছি, রশিদের বিরুদ্ধে খেলে তারা (বাংলাদেশি ব্যাটাররা), রশিদের বলের বিরুদ্ধে নয়।