এডুকেশন ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশদের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বরিশাল, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাগেরহাটে মঙ্গলবার (৩০ জুন) সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে ২০১৭ ও ২০২০ সালে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪২ জন শিক্ষানবিশ এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষানবিশ লিটন সরকার, শিরিনা আক্তার, সৈয়দ নাজিমুর রহমান, নিজাম শিকদার, মো. মনিরুজ্জামানসহ আরও অনেকে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
বক্তারা বলেন, ২০১৭ ও ২০২০ সালে আমরা আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী ৯০ হাজার পরীক্ষার্থী বার কাউন্সিলের অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। এরমধ্যে মাত্র ১২ হাজার ৮৮৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ অনুষ্ঠিত এমসিকিউ পরীক্ষা হওয়ার পর ৩ মাসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনার জন্য তা নেয়া সম্ভব হয়নি।
এছাড়া নিয়মিত বার কাউন্সিলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বছরের বছর ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী অনেক শিক্ষার্থী আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি বা পারছেন না।
ফলে আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় আমরা এক ধরণের মানবেতর জীবনযাপন করছি। তাই মানবিক দৃষ্টিতে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবি জানানো হচ্ছে।
এ দাবি পূরণের জন্য এর আগে আমরা জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
বেলা ১২টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে গেজেট প্রকাশ করে সনদ দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষানবিশরা। তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী ছয় মাস পর পর সনদ পরীক্ষা হলেও তিন বছর নিয়ম অনুযায়ী সনদ পরীক্ষা হচ্ছে না। তার উপর করোনার কারণে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেল সনদ পরীক্ষা। তাই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের মানববন্ধন পুলিশের বাধায়পণ্ড হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তবে মানববন্ধন চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা ওসি মো. সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অনুমতি না থাকায় মানববন্ধন থেকে ব্যানার ফেস্টুন কেড়ে নিয়ে সেটি ছত্রভঙ্গ করে দেন।
মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি মো. কাউছার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আজমল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোরাদ মিয়াসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষানশিশ আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি মো. কাউছার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত ২০১৭ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এমসিকিউ উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের লিখিত পরীক্ষা করোনা ভাইরাসের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বতর্মানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তারা বলেন, গত ২০১৭ ও ২০২০ সালের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ন শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করার পাশাপাশি ২০২০ সালের মধ্যেই এনরোলমেন্ট প্রসেস সম্পন্ন করার জন্যে ২০১৭ সালের আপিল বিভাগের রায় আছে। তারা সেই রায়টি কার্যকর করার দাবি জানান।
এছাড়া করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সরাসরি গেজেটের মাধ্যমে আইনজীবী হিসেবে সনদ প্রদান করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বার কাউন্সিলের কাছে দাবি জানান তারা। সূত্র : সময় টিভি