কে হবেন পঞ্চদশ দালাই লামা-এ নিয়ে গত এক দশক ধরে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে চলছিল আলোচনা। এ বিষয়ে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে চীনও। এবার এই পদে তাদের অনুগত কাউকে বসাতে চীন হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উত্তরসূরির বিষয়ে জানালেন ১৪তম দালাই লামা তেনজিন গিয়াতসোর। বললেন, চীনের বাইরে ‘মুক্ত দুনিয়া’তে হবে দালাই লামার পুনর্জন্ম। নিজের লেখা বই ‘ভয়েস ফর দ্য ভয়েসলেসে’ এ ভবিষ্যদ্বাণী করেন তিনি। তবে দালাই লামার এমন ভবিষ্যদ্বাণী চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলতে পারে। এএফপি।
ছয় দশকেরও বেশি সময় আগে তিব্বতে চীনের শাসন থেকে পালিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বজুড়ে তিব্বতিরা চান, দালাই লামা পদ থাকুক। সাম্প্রতিক বেশ কয়েক বছর ধরে চীন সরকার জোর দিয়ে একাধিকবার বলে এসেছে, পরবর্তী দালাই লামা নির্বাচনের অধিকার শুধু তাদের রয়েছে। তবে দালাই লামা বলেছেন, চীনের মনোনীত কোনো উত্তরসূরিকে তিনি স্বীকৃতি দেবেন না। ১৯৮৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বর্তমান দালাই লামাকে চীন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে আখ্যা দিয়ে আসছে। সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘দালাই লামা হলেন একজন রাজনৈতিক নির্বাসিত ব্যক্তি। যিনি ধর্মের আড়ালে চীনের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছেন। তিব্বত বিষয়ে চীনের অবস্থান সব সময় পরিষ্কার ও অভিন্ন। দালাই লামার বক্তব্য তিব্বতের উন্নতি ও সমৃদ্ধির বাস্তবতা পরিবর্তন করতে পারবে না।’ গত মাসেই চীন বলেছিল, তারা আশা করছে দালাই লামা ‘সঠিক পথে ফিরে আসবেন’। শুধু তাই নয়, বেজিংয়ের বার্তা ছিল, যদি তিনি তিব্বত এবং তিব্বতিদের চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে মেনে নেন সেক্ষেত্রে দালাই লামার সঙ্গেও ভবিষ্যতে আলোচনার পথ খোলা থাকবে।
তিব্বতীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশ্বাস করা হয়, একজন উচ্চপদস্থ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মৃত্যুর পর তার আত্মা একজন শিশুর মধ্যে পুনর্জন্ম লাভ করে। মাত্র ২ বছর বয়সে বর্তমান দালাই লামাকে এই পদের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। তিনি তার বইয়ে জানিয়েছেন, তার মৃত্যুর পরেও তিব্বতের স্বাধীনতার লড়াই জারি থাকবে।