বিজ্ঞানীরা এমন একটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন, যা একাধিক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে পারে—এমন সম্ভাবনা আগে কখনও এতটা পরিষ্কার হয়নি। কঠিন ও চিকিৎসা–প্রতিরোধী টিউমারের ক্ষেত্রেও এই ভ্যাকসিন দুর্দান্ত কার্যকারিতা দেখিয়েছে। শুধু টিউমার ছোট করা নয়, বরং আক্রমণাত্মক ক্যান্সার পুরোপুরি ধ্বংস করতেও এটি সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অগ্ন্যাশয়, ডিম্বাশয় ও ত্বকের মেলানোমাসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এই একটি ভ্যাকসিনই টার্গেট করতে পারে।
ভ্যাকসিনটি ইমিউন সিস্টেমকে এমন একটি সাধারণ চিহ্ন চিনতে শেখায়, যা অনেক ধরনের ক্যান্সার কোষে পাওয়া যায়। শরীরে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রতিরোধক কোষগুলো সেই চিহ্নযুক্ত ক্যান্সার কোষ খুঁজে বের করে ধ্বংস করে, আর সুস্থ টিস্যু অক্ষত থাকে। যেন শরীরে একবারেই বহু ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়।
প্রাণীর ওপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর টিউমারের আকার দ্রুত কমে যায়। এমনকি পরবর্তীতে নতুন ক্যান্সার কোষ প্রবেশ করানো হলেও শরীর তা সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আক্রমণ করেছে। অর্থাৎ ভ্যাকসিনটি দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা গড়ে তোলে—যা ইমিউনোথেরাপির সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।
এই প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে mRNA–ভিত্তিক আধুনিক পদ্ধতি এবং নতুনভাবে চিহ্নিত একটি টিউমার–সিগনেচার। এটি টি–কোষকে সক্রিয় করে, যেগুলো ক্যান্সার ধ্বংসের ক্ষেত্রে ইমিউন সিস্টেমের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
অচিরেই মানুষের ওপর পরীক্ষা শুরু হবে। সবকিছু ঠিকঠাক হলে ক্যান্সার চিকিৎসায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে পারে—বিভিন্ন ক্যান্সারের জন্য আলাদা আলাদা ওষুধের বদলে এক ভ্যাকসিনেই মিলতে পারে সমাধান। হয়তো একটি ভ্যাকসিনই হয়ে উঠবে বহু ধরনের টিউমারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর ঢাল।

