রাজশাহীতে কয়েক দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহীর কয়েকটি কাঁচা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মাত্র ৫ দিন আগেও এর দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি ছিল বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁদের দাবি, টানা বৃষ্টির কারণেই মরিচের এই বাড়তি দাম।
আজ সকাল ৭টার দিকে রাজশাহী নগর–সংলগ্ন পবা উপজেলার খড়খড়ি বাইপাস এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পর্যাপ্ত মরিচ নেই। যেসব মরিচ আছে, সেগুলোর বেশির ভাগই পাকা। এই মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত। আর অপেক্ষাকৃত ভালো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে।
বিক্রেতা আলী হোসেন জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গাছে মরিচ নেই। এ কারণে দাম বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৩৬০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বৃষ্টি কমলে হয়তো দাম কমে যাবে। আর বৃষ্টি বাড়তে থাকলে মরিচগাছ মরে যাবে, তখন দাম আরও বাড়বে।
বিক্রির জন্য এই হাটে কয়েক কেজি মরিচ আনেন পারিলা গ্রামের কৃষক মনির হোসেন। তিনি জানান, পারিলা গ্রামে তাঁর কয়েক শতাংশ মরিচখেতে কয়েক দিন ধরে পানি জমে আছে। খেতে নামা যাচ্ছে না। খেতের পাশ থেকে কিছু মরিচ তুলেছেন। সেগুলো বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। তিনি ৩০০ টাকা কেজি দরে দাম চাচ্ছেন। তাঁর আশঙ্কা, আর দুই-তিন দিন এমন বৃষ্টি হলে মরিচখেত নষ্ট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে কিছু গাছ পচে গেছে। পানি নামার জায়গা নেই।
হাটটিতে অপেক্ষাকৃত ভালো মরিচ নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ী তসলিম। তিনি এক কৃষকের কাছ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে এসব মরিচ কিনেছেন। পরে সেই মরিচ ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন। তসলিম বলেন, বাজারে মরিচ নেই বললেই চলে। অথচ সেখান থেকেই রাজধানী ঢাকায় মরিচ পাঠানো হয়। এই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই কেজি মরিচ কিনে নেন হায়দার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আজ অনুষ্ঠান আছে। এতে মরিচ লাগবেই। এ কারণে এত দাম দিয়েও মরিচ কিনতে হলো।’
নগরের বিনোদপুর ও সাহেববাজার এলাকার কাঁচাবাজারেও মরিচের ঘাটতি নজরে পড়েছে। সেখানে মানভেদে কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় মরিচ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এসব এলাকার বিক্রেতারা জানান, রোদ না উঠলে দাম কমবে না। বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ নেই বললেই চলে।
নগরের সাহেববাজার এলাকায় ২৫০ গ্রাম মরিচ কেনেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আজকে এক পোয়া মরিচ পাওয়া গেল ৮০ টাকায়। তাও মরিচ খুব ভালো না। অথচ কয়েক দিন আগে ৮০ টাকাতে পুরো এক কেজি মরিচ পাওয়া যেত।’