হেল্থ ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: করোনাভাইরাসে একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন দেশের ৪৯ জন চিকিৎসক। এ নিয়ে ৪২২ জন চিকিৎসক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। আজ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের ৬ জন চিকিৎসক, ৮ জন সেবিকা, একজন ওয়ার্ড মাস্টার এবং তিনজন স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই ১৫ চিকিৎসক ও ৩৭ জন সেবিকাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ড। হৃদরোগে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত এ সরকারি হাসপাতালটির পরিচালক জানান, সংক্রমণ পরিস্থিতি কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে আপাতত এই হাসপাতাল লকডাউন করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
গত ১ সপ্তাহের প্রাপ্ত্ তথ্য বলছে, ২১ এপ্রিল যেখানে আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ২শ’, সবশেষ ২৭ এপ্রিল সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৭৩ জনে। আক্রান্ত চিকিৎসকদের মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছেন ২৮৩ জন। পরের অবস্থানে আছে ময়মনসিংহ। বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. নিরুপম দাশ বলেন, এটা আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ক্ষেত্রে অশনিসংকেত। করোনা যুদ্ধ শুরুই হয়নি, এরমধ্যে যদি আমাদের চারশ’ চিকিৎসক আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়ে আসলে আমরা ভীত।
এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসাকর্মীদের জন্য নানা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। কর্মরত চিকিৎসকদের জন্য আবাসনসহ নানা সুবিধা নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনার কথা বলছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।
কোভিড-১৯ জাতীয় প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ইকবাল আর্সালান বলেন, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের হার অনেক বেশি বৈশ্বিক তুলনায়। আগে থেকে তাদের প্রস্তুত করা হয়নি। মানসম্পন্ন সামগ্রী হয়ত সংগ্রহ করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম। টিআইবির ন্যায়পাল অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ খাতটি আগে থেকেই দুর্বল ছিল। এখন আরও দুর্বল হয়েছে। বিশাল সংখ্যায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হচ্ছেন। তার মানে এ সমুখসারির যোদ্ধোদের যথাযথ সুরক্ষা দিতে পারছি না। এ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলোর সদুত্তরের ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন, বর্তমান দুঃসময় মোকাবিলায় চিকিৎসকদের যেমন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করে তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে। সূত্র : এটিএন বাংলা ও সময় টিভি