মুক্তমঞ্চ ডেস্ক, আজনিউজ২৪: পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী মহোদয়ের পিএস হিসেবে আজ দুই বছর পূর্তি হলো। উপ-মন্ত্রী মহোদয় অসাধারণ একজন অভিভাবক। নেতা হিসেবে, মন্ত্রী হিসেবে সর্বোপরি একজন মানবিক মানুষ হিসেবে। পরিশ্রম, সততা, দক্ষতা ছাড়াও মানুষের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার অসম্ভব গুনাবলীর সমন্বয় রয়েছে তাঁর মধ্যে। শান্তি চুক্তির সময় উত্তাল পাহাড়ে মটর সাইকেলে করে সন্তু লারমার কাছে যাওয়া কিংবা রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় মাসের পর মাস কক্সবাজারে অবস্থান একটি দুইটি উদাহরণ মাত্র।। ছাত্র রাজনীতির কিংবদন্তী সমতুল্য। তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা শুনলে সময় পার হয়ে যাবে, ঘটনার শেষ হবে না।
১/১১ সময় বিরাজনীতিকরণের আতংকে যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো সবাই, তখন অনেক মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। তার মধ্যে একটি ছিল দুর্নীতির অভিযোগ। তিনি রাজনৈতিক সব মামলা মোকাবিলা করার সিন্ধান্ত নেন কিন্তু দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নেন। একদিন তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান লেঃ জেঃ হাসান মশহুদ চৌধুরী স্যারের সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুদকের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবী করেন। দুদক চেয়ারম্যান মহোদয় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ফোন করেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের মামলার পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক মামলাগুলোর কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান মহোদয় তখন সুনির্দিষ্টভাবে দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে চান। তদন্ত কর্মকর্তা তখন বলেন ‘তাঁর বিরুদ্ধে তিনবার তদন্ত হয়েছে কিন্তু দুর্নীতির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে দুদক থেকে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তাঁকে প্রত্যয়ন দেয়া হয়। সততার অসীম সাহস নিয়ে সব সময় এগিয়ে চলেছেন।
করোনাকালে সবাই যখন মৃত্যু আতংকে ঘরবন্দী তখন তিনি ত্রাণ নিয়ে ছুটেছেন প্রতিটি গৃহে। স্ত্রী ও দুই ভাইয়ের বেতনের সব টাকাই তিনি করোনায় দুস্থ মানুষের মাঝে দান করেছেন। মানুষ যখন হাসপাতালে যেতে ভয় পাচিছল, তিনি একটি গাড়িতে দুইজন ডাক্তার, নার্স আর প্রয়োজনীয় সকল ঔষধ দিয়ে বাড়ী বাড়ী চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিয়েছেন। নির্বাচনী এলাকায় কোন মানুষ কিংবা দলীয় নেতা কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসছে, এমন খবর পেলেই ছুটে যান হাসপাতালে। তিনি আগেই ডাক্তার, বেড সব ঠিক করে রোগীদের রিসিভ করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন।
নদী ভাঙ্গন পরিদর্শনের সময় উত্তাল স্রোতে কয়েকবার স্পিড বোট নিমজ্জিত হবার উপক্রম হয়েছে। ঝড়, বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগই তাঁকে আটকাতে পারেনি কর্তব্যকর্ম থেকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তিনি নিজের ভিতর থেকে অসীম শক্তি লাভ করেন। তিনি দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে যান সবার আগে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু ঝুঁকির কথা বললে, স্যার বলেন,‘‘গুলিবিদ্ধ হয়েছি, গ্রেনেডের স্প্রিন্টার শরীরে বয়ে বেড়াচিছ, অসম্ভব নির্যাতনের শিকার হয়েছি, বহুবার কারাবরণ করেছি মহান আল্লাহ আমার প্রতি সহায় আছেন। বছর খানেক আগে নিজ এলাকায় যখন নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল, তিনি সারারাত ঘুমাননি। দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনকে সংগঠিত করে সারারাত দুর্গতদের পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন। ঢাকা থেকে ভোর রাতে রওনা দিয়ে সূর্য উঠার আগেই তাদের পাশে পোঁছে গেছেন। তাঁর এলাকায় যে সকল শ্রমিক ঈদের দিনে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করেছেন সবাইকে নতুন পোষাক, অর্থ সহায়তা এবং গরু/ছাগল জবাই করে আপ্যায়ন করেছেন। নির্বাচনী এলাকায় টিউব ওয়েল দিয়েছেন কিন্তু টিউব ওয়েল স্থাপন করার সরকারী খাতে জমা দেওয়ার টাকাও তিনি ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গরীব মানুষের যেন কোন কষ্ট না হয়। তিনি দুই বছরে নদী ভাঙ্গন কবলিত ৩০ টি জেলায় ১৪৫ বার সফর করেছেন।
দল এবং কর্মী অন্তপ্রাণ একজন মানুষ তিনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকার কারণে সারা বাংলাদেশের অজস্র নেতা কর্মী ছুটে আসে তাঁর কাছে । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্যারের আবেগ আর ভালোবাসার আরেকটি জায়গা। নেতা কর্মীদের জন্য তাঁর দুয়ার সব সময় খোলা। এসে দেখা করতে পারেননি কিংবা কথা বলতে পারেননি এমন কখনো হয়নি। ৪০ বছর ধরে রাজনীতি করে আজ এ অবস্থায় এসেছেন। উপ-মন্ত্রী মহোদয় বলেন, বয়সের কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে পাননি কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছেন। তাঁরই আদর্শে তিলে তিলে নিজেকে গড়েছেন। তাঁর সকল অর্জনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া। এছাড়াও তিনি প্রায়ই বলেন, মন্ত্রীর চেয়ার খুবই সাময়িক, আওয়ামী লীগই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা।
এলাকার উন্নয়ন কিংবা মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত সব ক্ষেত্রে সমান মনোযোগ দিয়েছেন। রাজনীতির দীর্ঘ পথ চলায় হয়েছেন মানবিক, থেকেছেন সৎ এবং সাহসী। মন্ত্রণালয়ের স্টাফ কিংবা ব্যক্তিগত স্টাফ যে কেউই বিপদে কিংবা সমস্যায় পড়েছে অবলীলায় স্যারের কাছে গিয়েছে এবং স্যার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন।
ত্রিশ বছর এই নামটির সাথে পরিচিত কিন্তু দুই বছরে সরাসরি কাজের অভিজ্ঞতা বিশাল। এত অল্প লিখলে অতৃপ্তি থাকে। একটি কথা স্যার প্রায়ই বলেন, কাজ করতে গেলে ভুল হতেই পারে কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কাজ করা যাবে না।
দুই বছর কাজ করেছি, এমন অভিভাবক পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আপোষহীন কর্মী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজ হাতে গড়া একেএম এনামুল হক শামীম এমপি, মাননীয় উপ-মন্ত্রীর জন্য নিরন্তর মঙ্গল কামনা। মহান আল্লাহ স্যারকে দীর্ঘজীবী করুন।
কামরুল তালুকদার তুহিন
সভাপতি, ২৫তম বিসিএস ফোরাম
পিএস, পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী
উপ-সচিব