ন্যাশনাল ডেস্ক: ইলিশ ধরার জন্য দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাঁদপুর ও ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলেরা। সোমবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরার উৎসবে নামবেন তারা। এ জন্য তারা আগে থেকেই জাল ও নৌকাসহ ইলিশ ধরার অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছেন।
এদিকে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ফের সরগরম হয়ে উঠবে মৎস্যঘাটগুলো। খুলবে বন্ধ থাকা বরফকল। জেলে পল্লিও হয়ে উঠবে মুখর। জেলে, মৎস্যজীবী ও আড়ৎদারদের হাকডাকে মুখরিত হয়ে উঠবে আড়তগুলো।
রোববার (২৪ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে জেলার বিভিন্ন মাছ ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, তুলাতলী, নাছির মাছি, ভোলার খাল, ইলিশা ও শিবপুরসহ বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে জেলেদের মাছ ধরার প্রস্তুতি। চাঁদপুরের জেলাপাড়ায় কেউ জাল বুনছেন কেউ নৌকায় রং দিচ্ছেন কেউ বা নৌকা-ট্রলার মেরামত করছেন। কখন নদীতে মাছ শিকারে নামবেন এমন অপেক্ষায় জেলেদের। অবশেষে প্রতীক্ষার পালা শেষ করে এখন নদীতে নামতেই প্রস্তুত তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় তুলঅতলী ঘাটের জেলে বশির মাঝি ও হারুনসহ অন্যদের সাথে। তারা জানালেন, এতদিন মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা বন্ধ ছিলো, ধার-দেনা করে চলেছি, অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। এখন মাছ ধরা শুরু হচ্ছে আবার আমরা নদীতে মাছ শিকারের নামবো। এতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পেলে বিগত দিনের ঋণ পরিশোধ হবে।
ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেক জেলে নদীতে যায়নি, সরকারের অভিযান মেনেছে। এতদিন জেলেরা অপেক্ষা ছিলো কবে থেকে মাছ ধরার শুরু হবে। তাদের সেই প্রতীক্ষার পালা শেষ, তারা এখন নদীতে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন। জাল নৌকা নিয়ে জেলেরা নেমে পড়বেন মাছ শিকারে। নিবন্ধিত অনেক জেলেই এবার পুনর্বাসনের চাল পেয়েছেন।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২১ দিনে জেলায় ৩৪২টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এরমধ্যে ৩৯৯ জেলেকে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১৮ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৮১ জনকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়াও ৭ লাখ ৫৭ হাজার মিটার জাল এবং ২ হাজার ১৫৩ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১১ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ দিন ইলিশ ধরার বন্ধ ছিলো। ২৬ অক্টোবর থেকে মাছ ধরার শুরু হচ্ছে। এখন আর জেলেদের মাছ ধরতে কোনো বাধা নেই। মৎস্য বিভাগের অভিযানে নদীতে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আশাকরি এ বছর ইলিশের উৎপাদন আগের চেয়ে অনেক বাড়বে।