ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ হাজার বিদেশি পর্যটক ইসরায়েলে আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষাপটে আকাশপথ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে, তারা পর্যটকদের সহায়তায় ২৪ ঘণ্টার ভার্চুয়াল অফিস চালু করেছে, যা হিব্রু এবং ইংরেজি দুই ভাষায় তথ্যসেবা দিচ্ছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, পর্যটন খাতের বিভিন্ন অংশীজন—যেমন হোটেল ও অন্যান্য আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছে, যাতে পর্যটকরা আবাসনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতে পারেন।
পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা পর্যটকদের দেশে ফেরার সুযোগ তৈরি করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এজন্য বিদেশি পাসপোর্টধারীরা যাতে স্থলপথে জর্ডান ও মিশরের সীমান্ত পার হতে পারেন, সেই সুযোগগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। এসব সীমান্ত এখনও খোলা রয়েছে।’ খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েলে ৩৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। যার অধিকাংশ ধ্বংস করা হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (১৬ জুন) স্থানীয় সময় ভোর রাত ৪টার দিকে ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। যেগুলো সেন্ট্রাল ইসরায়েল এবং হাইফাতে আঘাত হানে।
ইরানের চালোনো সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এ হামলায় আটজন নিহত এবং ৯৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার থেকে ইরানের চালানো হামলায় মোট ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত হয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, প্রত্যেকবার হামলায় ইরান ৩০ থেকে ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান প্রকৃতপক্ষে একসাথে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু ইরানে অবস্থিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থলগুলোতে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলার ফলে সেই পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটে এবং ইরানের হামলা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড দাবি করেছে, তাদের সাম্প্রতিক হামলায় একটি নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ইসরায়েলের বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তবে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই স্বীকার করে আসছে যে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি দুর্ভেদ্য নয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোট হামলার মধ্যে প্রায় ৫-১০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইসরায়েলে আঘাত হানে।