বয়স মোটে ১৯। এর মধ্যেই আয়াক্সের হয়ে একশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন জোরেল হাতো। ক্লাবের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন আরও বছর দুয়েক আগে। এসবেই ফুটে উঠছে তার প্রতিভা, সামর্থ্য আর সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনার পথে ছুটে পূর্ণতার ঠিকানা ছুঁতে তরুণ প্রতিভাবান ডিফেন্ডার পা রাখলেন চেলসিতে।
প্রায় সাড়ে চার কোটি ইউরো ট্রান্সফার ফিতে আয়াক্স ছেড়ে চেলসিতে নাম লিখিয়েছেন হাতো। দুই ক্লাবই রোববার বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে তা। দারুণ সম্ভাবনাময় এই তরুণের সঙ্গে চেলসির চুক্তি সাত বছরের।
ডাচ লিগের সেরা তরুণ ফুটবলারের স্বীকৃতি ‘ইয়োহান ক্রুইফ ট্যালেন্ট অব দা ইয়ার’ গত মৌসুমে জিতেছেন তিনিই।
নিজের শহরের দল স্পার্টা রটারডামের একাডেমি হয়ে সাত বছর বয়সে ফুটবলার হয়ে ওঠার অভিযান শুরু হাতোর। ১২ বছর বয়সে তার ঠিকানা হয় আয়াক্সের একাডেমি। সেখানেই নিজেকে গড়ে তোলেন। আয়াক্সের যুব দলে তার খেলা দেখে ইউরোপের অনেক ক্লাবই তার প্রতি ছিল আগ্রহী। তবে তিনি রয়ে যান আয়াক্সেই। ২০২২ সালে ক্লাবের দ্বিতীয় দল হয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মূল দলে অভিষেক হয়ে যায় বয়স ১৭ পূর্ণ হওয়ার আগেই।
পারফরম্যান্স দিয়ে দ্রুতই দলে নিয়মিত জায়গা করে নিতে থাকেন তিনি। অভিষেক মৌসুমে ক্লাবের যুব একাডেমির সবচেয়ে প্রতিভাবান ফুটবলারের পুরস্কারও জিতে নেন।
ক্রমেই তিনি হয়ে ওঠেন আয়াক্সের রক্ষণের ভরসা। অভিষেকের বছরই ১৭ বছর ২৮২ দিন বয়সে ক্লাবকে নেতৃত্ব দিয়ে নাম লেখান ইতিহাসে।
নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলে ও নেতৃত্ব দিয়ে ১৭ বছর বয়সে জাতীয় দলেও অভিষেক হয়ে যায় তার।
চেলসিতে সাত বছরের চুক্তি জোরেল হাতোর। ছবি: রয়টার্স।
চেলসিতে সাত বছরের চুক্তি জোরেল হাতোর। ছবি: রয়টার্স।
এমন একজনকে ধরে রাখতে না পেরে আয়াক্সের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আলেক্স ক্রুসের কণ্ঠে ফুটে উঠল হাহাকার।
“জোরেলের দলবদল দিয়ে আমাদের রক্ষণের একটি স্তম্ভকে হারালাম আমরা। সে শুধু দুর্দান্ত এক প্রতিভা ও অসাধারণ এক ফুটবলারই নয়, দারুণ এক চরিত্র ও ব্যক্তিত্বও। অন্তত আরও একটি বছর তাকে ধরে রাখার ইচ্ছে ছিল আমাদের। তবে আমরা বুঝতে পারছি যে, প্রিমিয়ার লিগে রোমাঞ্চকর এক অভিযানে নিজেকে এগিয়ে নিতে চায় সে।”
“নতুন এই চ্যালেঞ্জের জন্য আমরা হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে তাকে শুভ কামনা জানাই। আয়াক্সের হয়ে সে যা করেছে, তাতে আমরা গর্বিত। ইংল্যান্ডেও তার সাফল্য কামনা করি।”
গত মৌসুমে এবং এবারও হাতোকে পেতে আগ্রহী ছিল আর্সেনাল। আরও কিছু ক্লাবের আলোচনায় থাকার খবরও এসেছিল সংবাদমাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত চেলসিতে এসে উচ্ছ্বসিত তরুণ এই তারকা।
“এখানে যোগ দিতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত, খুবই খুশি। নিজের ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে মুখিয়ে ছিলাম। আমার জন্য চেলসিই সেরা জায়গা এবং সেখানে আসতে পেরে আমি দারুণ খুশি।”