ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের ক্রামাতোরস্ক শহরের রেল স্টেশনে রকেট হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে আরো শতাধিক বেসামরিক নাগরিক।
হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে মস্কোর উপর আরও নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হামলার জন্য কিয়েভকেই দায়ী করছে ক্রেমলিন।
এদিকে, ইউক্রেনকে দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ দেয়ার ব্যাপারে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেন সফররত ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন দের লিয়েন।
অন্যদিকে রুশ দখলমুক্ত ইউক্রেনের মাকারিভ শহরে ১৩২টি মরদেহ পাওয়ার দাবি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মিসাইল হামলার শঙ্কায় বন্দর নগরী ওডেসায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। আইনভঙ্গের অভিযোগে অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ১৫টি মানবাধিকার সংগঠনের কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।
শহরের মেয়র ওলেকজান্দার হনচারেঙ্কা বলেন, হামলার সময় ওই স্টেশনে চার হাজারের মতো লোক অবস্থান করছিল যাদের বেশিরভাগই নারী, শিশু এবং বয়স্ক মানুষ। তিনি জানান হাসপাতলগুলো আহত লোকজনে উপচে পড়ছে।
ইউক্রেন বলছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শত শত মানুষ আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার নিন্দা করে একে “সীমাহীন শয়তানি” বলে উল্লেখ করেছেন।
ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, “রণক্ষেত্রে আমাদের মুখোমুখি হওয়ার শক্তি ও সাহস হারিয়ে তারা এখন পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক লোকজন হত্যা করছে। এর শাস্তি না হলে, এটা কখনও থামবে না।”
রাশিয়া এধরনের হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এই অভিযোগ “উস্কানিমূলক” এবং “একেবারেই সত্য নয়।”
ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই অঞ্চলে তাদের অভিযানের কোনো পরিকল্পনাই ছিল না।
বিধ্বস্ত ট্রেন স্টেশনের যেসব ছবি পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে স্টেশনের এখানে সেখানে লাগেজসহ মৃতদেহ পড়ে আছে।
ক্রামাটরস্ক পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি শহর।
ওই অঞ্চলের গভর্নর বলছেন, রাশিয়ার সৈন্যরা দোনবাসে হামলা করবে এই আশঙ্কায় লোকজন সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল।
গভর্নর পাভলো কিরিলেঙ্কো টেলিগ্রামে লিখেছেন, হামলা সত্ত্বেও ওই অঞ্চল থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন,ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই হামলার নিন্দা করেছে।
বলা হচ্ছে, রাশিয়া এখন ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চল থেকে সৈন্যদের সরিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাসে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।