ইংলিশ ফুটবলের তত্ত্বাবধানে একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের বিল তৈরি করা হয়েছিল। বিবিসি জানিয়েছে, সেই বিল এখন আইনে পরিণত হয়েছে। ইংলিশ ফুটবলের সমর্থকেরা এই আইনকে ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে দাবি করেছেন। এর ফলে ফুটবল গভর্ন্যান্স আইন এমন একটি সংস্থাকে ক্ষমতা দেবে, যা সরকার ও ফুটবল কর্তৃপক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করবে।
সোমবার এই বিল রয়্যাল অ্যাসেন্ট (রাজকীয় অনুমোদন) পায়, যার ফলে এটি এখন আইন হিসেবেই কার্যকর হবে। এর মাধ্যমে ইংলিশ ফুটবলে ছেলেদের শীর্ষ পাঁচটি স্তরে তদারকির জন্য রেগুলেটর অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠাও নিশ্চিত হলো। সমর্থকদের মতোই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। তাঁর ভাষায়, এই বিল ‘ইংলিশ ফুটবলের জন্য গর্বের ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত’, যা ফুটবলের জন্য আরও শক্তিশালী ও ন্যায্য ভবিষ্যৎ এনে দেবে।’ সমর্থকদের সংগঠন ফুটবল সাপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এফএসএ) প্রধান নির্বাহী কেভিন মাইলস বলেছেন, ‘এটা দেশের ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক এক ক্ষণ।’ সমর্থকদের নেতৃত্বাধীন একটি পর্যালোচনা থেকেই এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের সুপারিশ উঠেছিল। ২০২৪ সালের মার্চে তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকার এই বিল সংসদে আনে, কিন্তু মে মাসের সাধারণ নির্বাচনের কারণে সেটি আর পাস হয়নি। পরে লেবার পার্টির সরকার চার মাস পর আবার বিলটি উত্থাপন করে। এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা চালু হবে চলতি বছরের শেষ দিকে। ব্রিটেনের সরকার জানিয়েছে, নতুন নিয়ম চালুর আগে ফুটবল–সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। স্টারমার বলেছেন, ‘আমাদের এই ঐতিহাসিক ফুটবল গভর্ন্যান্স আইন সমর্থকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। এটি তাদের প্রিয় ক্লাবগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং ফুটবল ক্লাবগুলোর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বজায় রাখবে।’
শুধু তা–ই নয়, এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুটবলকাঠামোর প্রতিটি স্তরে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, ক্লাবগুলোকে ইউরোপিয়ান সুপার লিগের মতো বিচ্ছিন্ন ও বিতর্কিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেও বাধা দেবে।
তবে সবাই যে এই আইনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, তা নয়; সংসদে বিল পাসের সময় কিছু কনজারভেটিভ সদস্য এর বিরোধিতা করেন। ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ভাইস চেয়ারম্যান কারেন ব্রাডি হাউস অব লর্ডসে বলেছেন, বিলটিতে ‘কিছু ঝুঁকি রয়েছে’ এবং এটি প্রতিযোগিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে বিবিসিকে সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব লিসা ন্যান্ডি বলেন, ‘এটি ফুটবল সমর্থকদের জন্য একটি বড় মুহূর্ত। কারণ, আমাদের অনেক ক্লাব, উদহারণস্বরূপ আমার ক্লাব উইগান অ্যাথলেটিকের কথা বলা যায়, যা কিনা দুর্বল মালিকানা ও আর্থিক সমস্যার কারণে বিপদে পড়েছিল। তবে এখন ফুটবল সমর্থকেরা নিশ্চিন্তে শ্বাস নিতে পারেন। কারণ, আমরা ফুটবলের ভিত্তি মজবুত করছি এবং সমর্থকদের আবার খেলাটির প্রাণকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনছি, যেখানে তাঁদের থাকা উচিত।’