‘আমের বাণিজ্যিক রাজধানী সাপাহার’ স্লোগান নিয়ে নওগাঁর সাপাহারে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সাপাহার পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল।
নওগাঁ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সাপাহার উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আয়োজিত এ উৎসবে রয়েছে আম সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল, আমজাত খাদ্যদ্রব্য ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের প্রদর্শনী। দেশি-বিদেশি বাজারের উপযোগী বিভিন্ন জাতের আম তুলে ধরা হচ্ছে। মেলায় মোট ৪০টি স্টল রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ, আল হেলাল ইসলামী একাডেমির অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও আমচাষি রফিকুল ইসলাম, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ এস এম রায়হান আলমসহ অনেকে।
উৎসব ঘিরে স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। তাঁদের আশা, এ আয়োজন সাপাহারের আমকে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করে তুলবে ও অঞ্চলটিকে ‘আমের রাজধানী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। আমচাষিদের অভিযোগ, নওগাঁর অধিকাংশ বাগানে ভালো কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করলেও রপ্তানি হয় খুবই সীমিত পরিমাণে। এতে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় অনেক চাষি উৎসাহ হারাচ্ছেন।
আমচাষি সোহেল রানা বলেন, ‘রপ্তানিযোগ্য আম দূষণমুক্ত হতে হয়। না হলে ফেরত আসার ঝুঁকি থাকে। এ জন্য দরকার ভ্যাপার হিট ট্রিটমেন্ট (ভিএইচটি) প্ল্যান্ট। পাশাপাশি দরকার প্যাকিং হাউস ও কোয়ারেন্টিন সনদ সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা। এ জন্য নওগাঁতে কোয়ারেন্টিন শাখা চালু করা জরুরি।’
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ বলেন, সাপাহার আম উৎপাদনে দেশের শীর্ষে থাকলেও চাষিরা এখনো বঞ্চিত। এখানে ২০ হাজারের বেশি আমচাষি রয়েছেন, ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমের চাষ করা হয়। গত বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার আম লেনদেন হয়েছে। তিনি রপ্তানিকারকদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘সাপাহারের আম সুস্বাদু ও মানসম্পন্ন। আপনারা সাপাহারের আম রপ্তানিতে এগিয়ে আসুন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, নওগাঁর মানুষ আম চাষকে শিল্পে পরিণত করেছেন। এখানে সারা বছর আম উৎপাদিত হয়। আম খেতে চাইলে সারা বছর সাপাহার আসতে হবে। তবে রপ্তানির অভাব বড় চ্যালেঞ্জ। দুই কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশিরাও বাংলাদেশের আমের চাহিদা রাখে। এই চাহিদা পূরণে রপ্তানি বাড়াতে হবে। তিনি আরও জানান, নওগাঁতে ভিএইচটি প্ল্যান্ট ও প্যাকিং হাউস স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।