যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি তদন্তের কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘কঠোর অবস্থান’ নিতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী।
এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্রাম্পের হুমকির পরও তার সামনে কথা বলছেন না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। ওই তদন্তে মোদি, আদানি এবং রাশিয়ার তেলের লেনদেন নিয়ে আর্থিক সম্পর্ক ফাঁস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
রাহুল গান্ধীর দাবি, এই তদন্তের কারণেই মোদির ‘হাত বাঁধা’। তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত মোদি সরকারের দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) অভিযোগ, আদানি গ্রুপ ভারত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও চুক্তি পেতে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ঘুষ দিয়েছে। ২০২০ সালে আদানি গ্রুপ একটি বৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প জিতে নেয়। পরে ওই প্রকল্পে সমস্যা দেখা দিলে, অভিযোগ রয়েছে, আদানি স্থানীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে চুক্তি চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।এই ঘটনা সংক্রান্ত আলাপচারিতা হোয়াটসঅ্যাপে আদানির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সাগর আদানি ও অপর একটি কোম্পানি আজুর পাওয়ারের প্রধানের মধ্যে হয়েছে বলেও আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ২০২৩ সালের প্রতিবেদনের পর আদানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে। আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কেনার মাধ্যমে ‘যুদ্ধযন্ত্রে জ্বালানি’ দিচ্ছে।
আদানি গ্রুপ বর্তমানে বিদ্যুৎ, সিমেন্ট, খনিজ, বিমানবন্দর, মিডিয়া, খাদ্যসহ বহু খাতে সক্রিয়। আদানি এক সময় প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রচারে প্রাইভেট জেট সরবরাহ করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, মিডিয়া হাউজ এনডিটিভি-র ‘শত্রুভাবাপন্ন অধিগ্রহণ’ ঘটিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।
এদিকে, জুন ২০২৫-এ আদানি তার কোম্পানির বার্ষিক সভায় বলেন, ‘আমাদের কেউই মার্কিন দুর্নীতিবিরোধী আইনের অধীনে অভিযুক্ত হননি।’ তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘যতই চাপ আসুক, আদানি গ্রুপ কখনও পিছপা হয়নি।’